ওয়েবসাইট থেকে আয় করার ৬ উপায়

0
4K

ওয়েবসাইট তৈরি করে তা থেকে বিভিন্ন উপায়ে আয় করা যায়। ওয়েবসাইট তৈরির পর সেটির মাধ্যমে কীভাবে আয় করবেন, সেই পরিকল্পনা ওয়েবসাইট তৈরির আগেই করতে হবে। পরিকল্পনার ওপর ভিত্তি করে ওয়েবসাইট থেকে আয়ের পথ পাওয়া যাবে। ই–কমার্স, ব্লগিং, সার্ভিস, অ্যাফিলিয়েশন, প্রোডাক্ট রিভিউসহ বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট তৈরি করে কীভাবে আয় করা যায়—সে বিষয়ে এ প্রতিবেদনে আলোচনা করা হলো।

গুগল অ্যাডসেন্স (ব্লগিং)

ওয়েবসাইট থেকে আয়ের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হলো গুগল অ্যাডসেন্স। অ্যাডসেন্স হলো গুগলের একটি বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক। ওয়েবসাইট ব্লগিংয়ে পছন্দের বিষয়ে লেখালেখি করে আয় করা যায় এবং এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। ব্লগ লিখে সফল হতে হলে আপনাকে ওয়েবসাইট ও এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে।

ব্লগিং শেখার জন্য ইউটিউব বা গুগলে খুঁজলে অনেক টিউটোরিয়াল পাওয়া যাবে। সেগুলো থেকে একটি টপিক বা বিষয় বাছাই করতে হবে। এমন বিষয় বেছে নিতে হবে, যেটি নিয়ে ব্যবহারকারীদের আগ্রহ আছে। ওয়েবসাইটে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ ট্রাফিক আসে এবং গুগলের গাইডলাইন (এসইও) মেনে চলেন, তবে আপনি গুগলের বিজ্ঞাপনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। নতুন ওয়েবসাইটকে নানা রকম আধেয় বা কনটেন্ট দিয়ে সাজাতে হবে, যেখানে সার্চ ইঞ্জিন, সোশ্যাল মিডিয়া, ডাইরেক্ট ও রেফারেল সোর্স থেকে ব্যবহারকারী বা ট্রাফিক আসে।

গুগল অ্যাডসেন্সে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে আবেদন করতে হবে। আবেদন করার কিছুদিনের মধ্যে গুগল আপনার সাইটটি পর্যালোচনা করবে। এরপর মেইলে জানাবে সাইটটি গুগল অ্যাডসেন্সের জন্য উপযোগী কি না। উপযোগী হলে আপনার সাইটে গুগল বিজ্ঞাপন দেখাবে। আর আপনার সাইট থেকে আয় হবে।

সাধারণত বাংলা বিষয়ের সিপিসি (কস্ট পার ক্লিক) কম থাকে। কারণ, বাংলা কনটেন্টের বিজ্ঞাপনমূল্য কম এবং শুধু বাংলাভাষীরা এ ধরনের সাইটে আসেন। বাংলা কনটেন্টের সিপিসি কম হওয়ার কারণে ইংরেজি সাইটের তুলনায় আয় কম হবে। ইংরেজি কনটেন্টের বিজ্ঞাপনের মূল্যহার বেশি এবং ব্যবহারকারীও বেশি।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে বিপণনের এমন একটি উপায় বা মাধ্যম, যা দিয়ে আপনি যেকোনো অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল পণ্য, অনলাইন দোকানের পণ্য বা অনলাইনে কিনতে পাওয়া যায় এমন যেকোনো পণ্য, নিজের ওয়েবসাইট, ব্লগ, সোশ্যাল মিডিয়া পেজ বা ইউটিউবের চ্যানেলে ‘অ্যাফিলিয়েট লিংকের মাধ্যমে’ প্রচারণা চালাতে পারবেন বা বিপণন করতে পারেন।

যদি নির্দিষ্ট কোনো ক্যাটাগরির পণ্য বা সেবা নিয়ে বিস্তারিত লেখালেখি করে এর ভালো–মন্দ দিক তুলে ধরে পরামর্শ দিতে পারেন, তবে আয় করা যাবে। এ জন্য আপনাকে ভালো মানের কনটেন্ট তৈরি করতে হবে, যাতে বেশি ব্যবহারকারী সাইটে আসে সে জন্য এসইও করতে হবে। আপনি চাইলেই যেকোনো অ্যাফিলিয়েট লিংক বসিয়ে পণ্য বিক্রি করে কমিশন হিসেবে আয় করতে পারেন।

কিছু জনপ্রিয় অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম হচ্ছে: অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম, ফ্লিপকার্ট অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম, গোড্যাডি অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এবং ই-বে অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম।

গেস্ট ব্লগ পোস্ট

গেস্ট ব্লগ প্রকাশ করার জন্য একটি নির্দিষ্ট বিষয় বা টপিকের জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন। যেখানে ওই নির্দিষ্ট বিভাগ  বা বিষয়ের ওপর গুণগত মানসম্পন্ন কনটেন্ট প্রকাশ করে প্রথমে সার্চ ইঞ্জিনে র‌্যাঙ্ক (তালিকার ওপরের দিকে)  করতে হবে। পরবর্তী সময়ে যাঁরা ওই বিষয়ে কাজ করবেন, তাঁরা গেস্ট পোস্ট প্রকাশ করার জন্য রিকোয়েস্ট পাঠাবেন। যা আপনার ওয়েবসাইটে প্রকাশের পর আয় হতে থাকবে। অবশ্যই কনটেন্ট প্রকাশ করার জন্য কিছু নির্দেশনা দিতে হবে। যেখানে কনটেন্টের দৈর্ঘ্য, লিংক, টাকার পরিমাণসহ যাবতীয় বিষয়ের উল্লেখ্য থাকবে। বর্তমানে এসইও করার জন্য গেস্ট ব্লগ পোস্টের অনেক চাহিদা।

ই–কমার্স (পণ্য বিক্রি করা)

যদি ইতিমধ্যে কোনো ব্যবসা থাকে বা ফেসবুকে কোনো পেজ থাকে এবং তা আরও প্রসারিত করতে চান, তবে একটি ব্যবহারবান্ধব (ইউজার ফ্রেন্ডলি) ই–কমার্স সাইট তৈরি করতে পারেন। এতে ব্যবহারকারীদের চাহিদা বুঝে ভালো মানের পণ্য বিক্রি করে তা থেকে আয় করতে পারবেন। ই–কমার্স সাইটে আপনি আপনার নিজের তৈরি পণ্য যেমন বিক্রি করতে পারবেন, আবার বিভিন্ন উৎস থেকে পণ্য সংগ্রহ করেও  বিক্রি করতে পারেন। ই–কমার্স ব্যবসা মূলত দুই ধরনের হয়। যেমন, বিটুবি ও বিটুসি। বিটুবি মানে হচ্ছে বিজনেস টু বিজনেস—এককথায় পাইকারি পণ্য বিক্রি। আর বিটুসি হচ্ছে, বিজনেস টু কাস্টমার। অর্থাৎ সরাসরি ক্রেতার কাছে খুচরা বিক্রি।

নিজের কাজ বিক্রি করা

যদি কোনো বিষয়ে এরই মধ্যে দক্ষতা অর্জন করে থাকেন এবং তা যদি সেবা হিসেবে বিক্রি করতে চান, তবে ওয়েবসাইট তৈরি করে আপনার সেবা বা সার্ভিসটি বিক্রি করতে পারেন। যেমন এসইও, ডিজিটাল বিপণন, সোশ্যাল মিডিয়া বিপণন, কনটেন্ট রাইটিং, গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েবসাইট ডিজাইন ইত্যাদি কাজ আপনি জেনে থাকলে বা শিখে নিজের কাজ বিক্রি করতে পারেন। যেখানে কাজের পরিমাণ ও সময়ের ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন প্যাকেজ আকারে মূল্য নির্ধারণ করতে পারেন। যথাযথভাবে এসইও করে গুগলের তালিকায় ওপরে থাকলে সহজেই আপনার সার্ভিস বিক্রি করতে পারবেন।

প্রোডাক্ট রিভিউ

বর্তমানে অনলাইনে পণ্য কেনার আগে ক্রেতা সঠিক তথ্য জানতে চান। পণ্যটি আসলেই ভালো কি না? দাম ঠিক আছে কি না? ইত্যাদি। আপনি যদি পণ্যের বিভিন্ন ভালো ও মন্দ বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা বা প্রোডাক্ট রিভিউ করতে পারেন এবং এটি যদি ব্যবহারকারীদের উপকারে আসে, তবে ইউজার এনগেজমেন্ট বাড়বে ও বিভিন্ন পণ্যের প্রচারণার জন্য বিভিন্ন কোম্পানি আপনাকে কাজ দেবে। যেখান থেকে আপনি ভালো পরিমাণে আয় করতে পারবেন। পাশাপাশি আপনার ওয়েবসাইটে  পণ্যের বিজ্ঞাপনও পাবেন। 

লেখক: সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) পেশাজীবী

Like
10
Search
Categories
Read More
Party
Jos Iglesias produces defensive participate in of the spring
It simply just Spring Performing exercises, hence unfortunately Individuals video games don rely....
By Camerons Camerons 2024-07-16 08:02:24 0 9K
Party
Что именно потребуется для того, чтобы заказать диплом в интернете?
В случае если вы планируете приобрести диплом ВУЗа, то неизбежно появились разнообразные вопросы....
By Sonnick84 Sonnick84 2024-08-28 06:29:39 0 9K
Shopping
Can Glueless Lace Human Hair Wigs Fall Off
Being that these types of wigs don’t come with glue or tapes, it doesn’t mean that...
By Mslynnhair Mslynnhair 2022-11-30 07:41:48 0 4K
Shopping
Spider x Corteiz Collab: Fusing Bold Style with Streetwear Edge
The fashion world is no stranger to collaborations, but every so often, a partnership comes along...
By Stussy Apperal 2024-10-31 06:19:45 0 1K
Shopping
Hellstar Clothing: The Ultimate Guide to Dark Streetwear
In the ever-evolving world of fashion, certain brands carve out their own niche by offering...
By Stussy Apperal 2024-11-19 11:12:56 0 2K