ডেঙ্গু যে মশা দিয়ে ছড়ায়, তা কে না জানে? কিন্তু মশা তাড়ানোর সঠিক উপায় হয়তো সবার জানা নেই। কেউ হয়তো প্রাকৃতিক উপায়ে মশা তাড়াতে নিমের তেলের ওপর ভরসা করেন। অনেকে আবার বলেন, তুলসীগাছ থাকলে মশা আসে না। এগুলোর কতটা কার্যকর, তার কোনো বৈজ্ঞানিকভাবে নির্ভরযোগ্য তথ্য আমাদের হাতে নেই।

তবে দিনে-রাতে মশা থেকে বাঁচার সবচেয়ে ভালো উপায় যে মশারি, এ ব্যাপারে কারও কোনো দ্বিমত নেই। জানালা এবং বারান্দাতেও মশারোধী নেট বা জালি লাগিয়ে নেওয়া উচিত। অনেকে আবার মশা তাড়াতে স্প্রে ব্যবহার করেন, কারও আবার কয়েল পছন্দ। এগুলোরও রয়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। আবার সন্ধ্যায় স্প্রে করে বা কয়েল জ্বালিয়েই মশা থেকে সারা রাত সুরক্ষিত থাকবেন, এ রকমটাও কিন্তু নয়। এসব উপকরণ বারবার ব্যবহারে স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়ে। এমনই আরও নানা তথ্য জানালেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাহনূর শারমিন।

জমানো পানি যদি থেকেই যায়

পানি জমে থাকতে না দিলে মশার বিস্তার কমবে, সেটা অনেকেই জানেন। তবে অনেকে জলজ উদ্ভিদ ভালোবাসেন। বারান্দায় বা ছাদে জলজ উদ্ভিদ রাখতে পছন্দ করেন। কেউ আবার ভালোবাসেন অ্যাকুয়ারিয়াম। মশা তাড়াতে কি এসব ভালোবাসা বিসর্জন দিতে হবে? নিশ্চয়ই না। আপনার বাড়িতে এমন কোনো পানির আধার যদি থাকে, তাহলে সেখানে গাপ্পি মাছ কিংবা খলসে মাছ রাখুন। মশার লার্ভা খেয়ে ফেলবে। মশা আর জন্মাতে পারবে না। কেউ কেউ জমাট পানিতে লার্ভানাশক রাসায়নিক পদার্থও ব্যবহার করেন। তবে রাসায়নিকে যে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে, সেটা ভুলে গেলেও চলবে না।

খেয়াল রাখুন

• শ্বাসতন্ত্রের রোগী বাড়িতে থাকলে কয়েল বা স্প্রে ব্যবহার না করাই ভালো। এগুলো তাঁর সমস্যা বাড়াবে।

• স্প্রে করার সময় অবশ্যই শিশু, গর্ভবতী নারী এবং পোষা প্রাণীদের দূরে রাখুন। সেই সময় নিজে মাস্ক পরে নিন। জানালা-দরজা বন্ধ রাখুন।

• স্প্রে যদি করতেই হয়, তাহলে অবশ্যই ঘরের কোণে এবং আসবাবের পেছনে ও নিচে করুন।

• কয়েল ও স্প্রে শিশু এবং পোষা প্রাণীদের নাগালের বাইরে রাখুন।

• মশারির কাছে কয়েল জ্বালাবেন না। কয়েল জ্বালিয়ে ঘুমিয়ে যাবেন না।

• স্প্রে এবং কয়েল নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কাজ করে। তাই একবেলা (সন্ধ্যায় শিশুদের পড়ালেখার সময়) এগুলোর কোনোটি ব্যবহার করে পরের বেলায়ও নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকা যাবে না। তখন মশা দূরে রাখার অন্য পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।