ডায়েট, ব্যায়াম ও ওজন কমানো–বাড়ানো নিয়ে পাঠকদের নির্বাচিত প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বারডেম হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ ও বিভাগীয় প্রধান শামছুন্নাহার নাহিদ

প্রশ্ন: আমি ছেলে। বয়স ৩৬ বছর। বিয়ে করেছি পাঁচ বছর। দুই সন্তান আছে। বর্তমানে আমার ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে ২০ কেজি বেশি। অধিকাংশ সময়ই স্ত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক তৈরিতে অনীহা কাজ করে। কোনো কোনো সময়ে ঘনিষ্ঠ হলেও সেটা এক কিংবা দুই মিনিটের বেশি স্থায়ী হয় না। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এটা কী আমার ওজনজনিত কোনো সমস্যা? নাকি অন্য কিছু? আমি প্রাকৃতিকভাবে কোনো খাবার খেয়ে কি উপকার পেতে পারি?

ফয়েজ, চট্টগ্রাম

উত্তর: আপনি যে সমস্যার উল্লেখ করেছেন, অনেক কারণেই তা হতে পারে, তবে ওজন বেশি একটা বড় কারণ। ওজন বেশি থাকলে ছেলেদের টেস্টোস্টেরন নামে একটা হরমোনের মাত্রা কমে যায়, ফলে ‘ইরেক্টাইল ডিজফাংশান’ হয়ে এই শারীরিক সম্পর্কজনিত সমস্যা তৈরি হতে থাকে।

আবার ওজন বেশির সঙ্গে যদি কারও ভুঁড়ি বা পেটে মেদ বেশি থাকে, অর্থাৎ পেটের মাপ ৪০ ইঞ্চির বেশি থাকে, তাঁদেরও শরীরের মাংসপেশি রিলাক্সকারী ‘নাইট্রিক অক্সাইড’ তৈরি বাধাগ্রস্ত হয়ে এই রকম হতে থাকে।

তাই আপনার ওজন কমাতে হবে, যার জন্য আপনার দিনের কাজগুলোকে একটু গুছিয়ে করতে হবে, যেমন—

১. আপনি আপনার খাবারটা প্রতিদিন একই সময়ে খাবেন, তাতে আপনার বিপাকক্রিয়া (মেটাবলিজম) খুব ভালো হবে।

২. খাবারের পরিমাণ একই রাখার চেষ্টা করবেন, যাতে আপনার ওজন স্বাভাবিকে রাখা সহজ হয়।

৩. খাবারের প্লেটে এমনভাবে খাবার নিবেন যেন শাকসবজি, মাছ বা মাংস, ডাল, সালাদ, ভাত বা শর্করা—প্রতিটা উপাদান সমান হয়। অর্থাৎ ‘স্বাস্থ্যকর থালা’ হিসেবে নিবেন, যাতে আপনার খাবার হয় সুষম, পূরণ করে শারীরিক পুষ্টি চাহিদা।

৪. খাওয়ার পরপরই শুয়ে অথবা বসে না পড়ে অন্তত আধঘণ্টা হাঁটাচলা করার চেষ্টা করবেন।

৫. প্রতিদিন কমপক্ষে এক ঘণ্টা দ্রুত হাঁটবেন বা অন্য কোনো ব্যায়াম করবেন, যাতে একদিকে আপনার বাড়তি ক্যালরি খরচ হতে থাকে, পাশাপাশি নতুন করে ক্যালরি জমতে না পারে।

৬. যেসব খাবার ওজন বাড়াতে পারে, সেগুলো খাওয়া বাদ দিন। যেমন ডুবো তেলে ভাজা খাবার, মিষ্টিজাতীয় খাবার, অতিরিক্ত ক্যালরিযুক্ত খাবার ইত্যাদি।

৭. রাতে কমপক্ষে ছয় ঘণ্টা ঘুমাবেন। এতে শরীরের হরমোনের প্রভাব স্বাভাবিক থাকে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।