খিচুড়ি খাবেন কেন?
বাঙালির কাছে বৃষ্টি মানেই যেন খিচুড়ি উৎসব। ইলশেগুঁড়ি হোক বা মুষলধারে বৃষ্টি, এক প্লেট ধোঁয়া–ওঠা খিচুড়ি মনকে চাঙা করে। এ সময় ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোও এই খাবারের ছবিতে ভরে উঠে। তবে খিচুড়ি শুধু সুস্বাদুই নয়, পুষ্টিগুণেও ভরপুর। এক প্লেট খিচুড়িতেই আপনি পেয়ে যাবেন শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি।
খিচুড়ি কেন এত পুষ্টিগুণে ভরপুর? উত্তরে পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ ও বিভাগীয় প্রধান নিশাত শারমিন বললেন, খিচুড়ির প্রধান উপাদান চাল ও ডালে আলাদা করে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে। চালে থাকে সিস টিন, মিথিওনিন নামে অ্যামিনো অ্যাসিড। আর ডালে থাকে লাইসিন। শুধু ভাত খেলে দেহে লাইসিনের ঘাটতি হয়। আবার শুধু ডাল খেলেও সিস টিন ও মিথিওনিনের ঘাটতি রয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে দুটো একসঙ্গে মিশিয়ে খেলে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিডের চাহিদা পূরণ হয়। দেহের পেশি গঠন, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানো, কোষ পুনর্গঠনে খিচুড়ি বেশ উপকারী
খিচুড়িতে চাল, ডাল ও বিভিন্ন ধরনের সবজি থাকে। এ ছাড়া মানুষ তাঁদের পছন্দ অনুযায়ী মাছ, মাংস, কলিজা, ডিম যোগ করেও রান্না করতে পারেন। এর আরও একটি প্রধান উপাদান হলো তেল বা ঘি। পুষ্টির চাহিদা পূরণে আমরা যে ছয়টি উপাদানের কথা বলি, এর সবই খিচুড়ির ভেতর একসঙ্গে রয়েছে। খিচুড়ির চাল থেকে শর্করা পাওয়া যায়। ডাল থেকে আসে আমিষ বা প্রোটিন। সবজি থেকে পাওয়া যায় ভিটামিন বা মিনারেল। তেল বা ঘি থেকে পাচ্ছি চর্বি। আর রান্নার জন্য পানি তো আছেই। এ ছাড়া খিচুড়িতে যেসব ডাল ব্যবহার করা হয়, সেগুলোতে প্রচুর পরিমাণ আঁশ ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট থাকে। এগুলো হজমে সাহায্য করে এবং নীরোগ রাখতে সাহায্য করে।
এ ছাড়া খিচুড়িতে সব ধরনের খাদ্য উপাদান থাকার কারণে এটি শক্তিবর্ধক, স্বাস্থ্যকর খাবার। এতে প্রতিটি পুষ্টি উপাদানের সমতা রক্ষা হয়। আবার মাছ বা মাংস দিয়ে রান্না করলে সেখান থেকেও আমিষটা পাওয়া যাচ্ছে। ছয় মাস বয়সের বাচ্চা থেকে শুরু করে যাঁদের কর্মক্ষমতা কমে গেছে, তাঁরা সব ধরনের পুষ্টি খিচুড়ি থেকে পেতে পারেন। ছোট শিশুরা সাধারণত বেশি খাবার একসঙ্গে খেতে পারে না। তাদের খিচুড়ি খাওয়ানো হলে একসঙ্গে বেশি পুষ্টি পায়। আবার সার্জারির পরে সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার যে আশঙ্কা থাকে, তা দূরে রাখতেও রোগীকে খিচুড়ি খেতে বলা হয়। কারণ, সব পুষ্টি একসঙ্গে থাকার জন্য এটি দেহে যথেষ্ট পরিমাণ শক্তি জোগায়, বাড়ায় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা। অল্প সময়ে দুর্বলতা কাটিয়ে শক্তি বাড়ানোর এক আদর্শ খাবার খিচুড়ি। এসব কারণেই খিচুড়ি পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি খাবার, বলছিলেন অ্যাপোলো ইমপেরিয়াল হাসপাতালের (চট্টগ্রাম) প্রধান পুষ্টিবিদ মাহফুজা আফরোজ।
রান্নার ক্ষেত্রে অনেকেই সহজ রেসিপি খোঁজেন। আলাদা করে মাংস রান্না করতে যাঁদের ঝামেলা মনে হয়, তাঁরা খিচুড়িকে বেছে নিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে বেশি মাংস দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। তবে গন্ধ ও স্বাদটা পাওয়া যায়। ছোট ছোট মুরগি বা চর্বি ছাড়া গরু বা খাসির মাংস দিয়ে খিচুড়ি রান্না করলে প্রোটিনের সঙ্গে আয়রন, জিংক ইত্যাদি উপাদানও পাওয়া যায়। আবার বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি চলছে, সে ক্ষেত্রেও খিচুড়ি হতে পারে স্বল্প খরচে চমৎকার একটি খাবার। অনেক উপাদান একসঙ্গে মেশানোর কারণে এতে খাবারের পরিমাণটা বাড়ে এবং সব পুষ্টি একত্রে পাওয়া যায়।
- Art
- Causes
- Crafts
- Dance
- Drinks
- Film
- Fitness
- Food
- Jocuri
- Gardening
- Health
- Home
- Literature
- Music
- Networking
- Alte
- Party
- Religion
- Shopping
- Sports
- Theater
- Wellness