মালয়েশিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন দেশটির বিরোধী নেতা আনোয়ার ইব্রাহিম।

বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) মালয়েশিয়ার রাজা সুলতান আব্দুল্লাহ জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠনের জন্য কয়েকদিনের আলোচনা শেষে আনোয়ার ইব্রাহিমকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করেন।

এর ফলে শনিবারের জাতীয় নির্বাচনের পর দেশটিতে যে রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল তার অবসান ঘটেছে।

আনোয়ার প্রায় সিকি-শতাব্দী ধরে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য রাজনীতি করে আসছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত তার সেই স্বপ্ন সফল হয়েছে।

তার এই রাজনৈতিক জীবনে তাকে দু’বার কারাবরণ করতে হয়েছে। সমকামিতার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়ে তিনি মোট ন’বছর কারাগারে কাটিয়েছেন।

এই অভিযোগ তিনি সবসময় অস্বীকার করে বলেছেন, এসবই ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার মধ্য দিয়ে মালয়েশিয়ার বাগ্মী রাজনীতিক আনোয়ার ইব্রাহিমের রাজনৈতিক জীবনের একটি বড় লক্ষ্য অর্জিত হলো।

খুব দ্রুতই তিনি দেশটিতে রাজনৈতিক তারকায় পরিণত হন। অনেকেই আশা করেছিলেন যে তিনি হয়তো তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের স্থলাভিষিক্ত হবেন।

কিন্তু সেরকম ঘটেনি। অর্থনৈতিক সঙ্কটকে ঘিরে ইব্রাহিম ও মাহাথিরের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। দুর্নীতি ও সমকামিতার অভিযোগে ইব্রাহিমকে কারাদণ্ডও দেওয়া হয়।

তার সেই সাজা ২০০৪ সালে বাতিল করে দেওয়া হলে তিনি পুনরায় রাজনীতিতে ফিরে আসেন। ২০১৩ সালের নির্বাচনে তার দল ইউএমএনও পার্টিকে প্রায় পরাজিত হওয়ার মুখে ঠেলে দিয়েছিল। কিন্তু তখন তার বিরুদ্ধে আবারও সমকামিতার অভিযোগ আনা হয় এবং ২০১৫ সালে তাকে পুনরায় কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে বিরোধিতা তীব্র হলে মাহাথির মোহাম্মদ তার অবসর জীবন থেকে রাজনীতিতে ফিরে আসেন এবং আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে সমঝোতা করেন। তারা দুজনে একত্রিত হয়ে ২০১৮ সালের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলকে নির্বাচনে পরাজিত করেন।

তাদের দুজনের মধ্যে সমঝোতার অংশ হিসেবে বলা হয়, মাহাথির আনোয়ারের কাছে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেবেন। কিন্তু ২০২০ সালেও প্রধানমন্ত্রীর পদ তার হাতছাড়া হয়ে যায়।

এখন তার সামনে অর্থনৈতিক সঙ্কট ও কোভিড মহামারির মতো অনেক কঠিন চ্যালেঞ্জ। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের সাথে নিয়ে তাকে এখন এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে।