যৌন হয়রানির শিকার পুরুষদের নিয়ে তৈরি হলো যে বাংলাদেশি ছবি
নারীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি নানাভাবে উঠে এসেছে টিভি নাটক, ওয়েব সিরিজ বা চলচ্চিত্রে। কিন্তু দেশে যৌন হয়রানির শিকার পুরুষদের নিয়ে সেভাবে কাজ হয়নি। এটিকেই তাই নিজের প্রথম সিনেমার বিষয় হিসেবে বেছে নিয়েছেন তরুণ নির্মাতা ইফ্ফাত জাহান। ‘মুনতাসীর’ নামে ওয়েবফিল্মটি ১৯ নভেম্বর বিশ্ব পুরুষ দিবসে মুক্তি পাবে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বিঞ্জ-এ।
২০১৯ সালে একটি মুঠোফোন কোম্পানির ট্যালেন্ট হান্ট প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন ইফ্ফাত জাহান। ছোটবেলা থেকেই পরিচালক হওয়ার স্বপ্ন ছিল, বড় প্রতিযোগিতায় সেরা হয়ে সে স্বপ্ন আরও বড় ভিত্তি পেল। কিন্তু সেটা ডালপালা মেলার আগেই হাজির হলো কোভিড মহামারি। পরিস্থিতি একটু ভালো হতেই আর দেরি নয়, ইফ্ফাত ছুটতে শুরু করলেন নিজের স্বপ্নের পেছনে।
দেশের অনেক নির্মাতার মতো ইফ্ফাতেরও শুরুটা বিজ্ঞাপন দিয়ে। বানিয়েছেন মিউজিক ভিডিও। গত বছর স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে একটি বিজ্ঞাপনচিত্র নির্মাণ করেন। কবীর সুমনের কথা ও সুরে আরমান আহমেদ সিদ্দিকীর ‘কোথায় হাঁটব দুজনে’ গানের ভিডিও বানান। ঝুলিতে আছে আরও কয়েকটি মিউজিক ভিডিও ও বিজ্ঞাপনচিত্র নির্মাণের অভিজ্ঞতা। কেবল দেশেই নয়, বাংলাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিজ্ঞাপনচিত্র বানিয়েছেন ভারতেও।
‘বাংলাদেশে বেশির ভাগ সময়ই নারীদের যৌন হয়রানি নিয়ে কথা হয়। কিন্তু পুরুষেরাও কিন্তু যৌন হয়রানির শিকার হয়। মেয়েশিশুদের মতো ছেলেশিশুরাও নানাভাবে যৌন হয়রানির শিকার হয়। আমার বন্ধু, আশপাশের পরিচিত অনেকের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি ছেলেরাও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। তখন মনে হলো এটা নিয়ে কাজ করা উচিত।’ বলছিলেন ইফ্ফাত জাহান। নারী-পুরুষনির্বিশেষে সবাই যৌন নির্যাতনের শিকার, মূলত এই ভাবনা থেকে শুরু হয় ‘মুনতাসীর’ করার চিন্তা।
কাজ শুরুর আগে তরুণ এই নির্মাতা বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করেন, প্রচুর মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। বুঝতে পারেন নির্যাতনের শিকার হলেও অনেক পুরুষই এটা নিয়ে কথা বলতে চান না। শৈশবে বা বড় হওয়ার পর নির্যাতনের শিকার অনেকে একটা ট্রমার মধ্যে চলে যান। তখন পরিচালকের মনে হয়, তাদের গল্পটাও তুলে ধরা জরুরি।
পুরুষদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মতো বিষয় নিয়ে ছবি করতে কতটা বেগ পেতে হয়েছে? পরিচালক জানালেন, তাঁকে সেভাবে কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বিঞ্জ-এ যখন নিজের গল্পটা শোনান, তাঁরা পছন্দ করে সবুজসংকেত দেন। ইফ্ফাত বলেন, অনেক দিন ধরেই ভাবছিলাম এমন একটা বিষয় বেছে নেব, যা আশপাশে ঘটছে। ফলে ছবি করার প্রস্তাব পাওয়ার পর এ ধরনের গল্পই তিনি তুলে ধরবেন বলে ঠিক করেন। তিনি বলেন, ‘যে কাজটা করব, যেন একটা প্রভাব ফেলে সেটা মাথায় ছিল। রোমান্টিক, থ্রিলার, অ্যাকশন নানা ধরনের কাজ হচ্ছে, কিন্তু আমাদের সমাজে আরও কিছু বিষয় আছে, যে গল্পগুলো বলাও জরুরি।’
গত ৯ অক্টোবর শুরু হয় শুটিং। দুই ধাপে ১০ দিনেই শেষ করেন কাজ। কেমন ছিল শুটিং অভিজ্ঞতা? পরিচালক বলেন, ‘সবাই অভিজ্ঞ শিল্পী, প্রত্যেকেই সহযোগিতা করেছেন। আমি যেহেতু পরিচালনায় নতুন, সবার সহযোগিতা, টিমওয়ার্ক কাজটা সহজ করে দিয়েছে।’
তরুণ এই পরিচালক মনে করেন, ওটিটির কল্যাণে এখন নানা ধরনের নিরীক্ষাধর্মী কাজের সুযোগ বেড়েছে। তিনি বলেন, তরুণ দর্শকেরা এখন পরিচালক, অভিনয়শিল্পী এসব নিয়ে মাথা ঘামান না, তাঁরা কাজটা দেখেন। ইফ্ফাতের আশা, আরও অনেক তরুণ, বিশেষ করে নারীরা, পরিচালনায় এগিয়ে আসবে। ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে আরও বৈচিত্র্যময় গল্প পাওয়া যাবে।
- Art
- Causes
- Crafts
- Dance
- Drinks
- Film
- Fitness
- Food
- Παιχνίδια
- Gardening
- Health
- Κεντρική Σελίδα
- Literature
- Music
- Networking
- άλλο
- Party
- Religion
- Shopping
- Sports
- Theater
- Wellness