সিনেমার বর্তমান অবস্থা, সিনেপ্লেক্সের রাজত্বে সিনেমা হলে প্রযোজকদের সিনেমা না দেয়া, সেই সঙ্গে হল থেকে দর্শকরা মুখ ফিরিয়ে নেয়ায় ঢাকার মতিঝিলে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী সিনেমা হল মধুমিতাও বন্ধের উপক্রম হচ্ছে। সিনেমা হলটির মালিক ইফতেখার নওশাদ বলেন, ‘আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে সিনেমা হলটি বন্ধের। হয়তো মধুমিতা সিনেমা হলটি বন্ধ করে দেয়া হবে!’

১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এ সিনেমা হলটি এখনও ঢাকার সিনেমা দর্শকের অন্যতম আকর্ষণ কেন্দ্র। তারপরও সিনেমা হলটি বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কিন্তু কেন হলটি বন্ধ করে দেয়া হবে–এমন প্রশ্নে ইফতেখার সময় সংবাদকে বলেন, ‘অনেক সিনেমা হল বন্ধ হয়েছে। সিনেমা হল বন্ধের কারণ হচ্ছে সিনেমা হলে পর্যাপ্ত কোনো কন্টেন্ট (ছবি) নেই। যদি কন্টেন্ট (ছবি) না থাকে, তাহলে আমরা হলে কী চালাব। এমনি এমনি তো হল চালু করে লোকসান দেয়ার কোনো মানে হয় না। সিনেমা হলে সিনেমা চলবে যদি আমরা সেই সিনেমায় না পাই, তাহলে আমরা কী করব? আমাদের পর্যাপ্ত সিনেমা চালানোর জন্য সিনেমা পায়, তবে তো হল টিকে থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এর আগে বেশ কয়েকবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে সিনেমা হল টিকিয়ে রাখার জন্য। আমরা দেশি-বিদেশি সব ধরনের সিনেমা চাই। যে সিনেমাগুলোর মাধ্যমে আমরা হল বাঁচিয়ে রাখতে পারব। কিন্তু সেই বিষয়টি আলোচনা পর্যন্ত স্থবির হয়ে আছে। এমন অবস্থায় আমাদের হল বন্ধ করে দেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। অনেক উৎসব তো দেখলাম, কাজ হলো না। হলের খাবার হলো ছবি। ছবিই যদি না থাকে, তাহলে হল চলবে কীভাবে? বাধ্য হয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, হলটি আমরা বন্ধ করে দেব।’

সিনেপ্লেক্সের কারণে হলে ধস নেমেছে। এর কারণ ব্যাখ্যা করেন নওশাদ। তিনি বলেন, ‘নতুন যে সিনেমাগুলো ভালো চলবে, সে সিনেমাগুলো আমাদের অর্থাৎ হল মালিকদের প্রযোজকরা দিচ্ছেন না। তারা সিনেপ্লেক্সে দিচ্ছেন। এসব কারণে আমরা হল মালিকরা সিনেমা পাচ্ছি না। এই যে দেখুন, দামাল সিনেমাটি চালাচ্ছি, এটি চলবে এ সপ্তাহ। দর্শক এই সিনেমাটি দেখতে খুব বেশি আসছে না। মোটকথা সিনেমার ব্যবসা কিন্তু ঠিকমতো হচ্ছে না। যদি সিনেমা হলে ধারাবাহিকভাবে সিনেমা মুক্তি পেত, তাহলে দর্শক কিন্তু হলে আসত।’