সিভি তৈরিতে অর্ধশত ভুল
Posted 2024-06-08 12:27:45
0
7K

১। বড় ভাইয়ের সিভি নিয়ে তার মধ্যে নিজের নাম ঠিকানা বসিয়ে সিভি তৈরিকে আমি বলবো প্রথম ভুল। ক্যারিয়ারের শুরুতেই নির্ভরশীলতা কি ঠিক? আমরা প্রত্যেকেই ইউনিক, প্রত্যেকের সিভিও ইউনিক।
২। সিভি কপি করার সময় অনেকের পিতার নাম, মোবাইল নম্বর ওই বড় ভাইয়ের টাই থেকে যায়। একবার এক ইলেক্ট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারকে সিভি পেয়েছিলাম। সিভিতে লেখা ছিলো মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। সব বড়ভাইদের দোয়া।
৩। সিভি সাহিত্যচর্চার জায়গা নয়। মনে রাখবেন, সিভি যত বড়, সিভি ছুড়ে ফেলে দেওয়ার সম্ভাবনাও তত বেশি। ফ্রেশার থেকে শুরু করে ৬-৭ বছর যারা চাকরী করছেন, তাদের সিভি হবে ২ পেজ। ৬-১৫ বছর যাদের অভিজ্ঞতা তাদের সিভি হবে তিন পেজ। প্রতি ১০ বছরের কাজ লিখতে একটি পেজ পাবেন।
৪। চক চক করলেই যেমন সোনা হয় না, তেমনি সিভিতে কালারিং করলেই যে সিভি চোখে পড়বে তা কিন্তু না। বরং সেটা আপনার রুচিহীনতা প্রকাশ করে। সিভি হবে সাদা কাগজে কালো লেখা। মনে রাখবেন, “What is simple, that is Beauty”
৫। ফরমেট ভালো হলে সিভি ভালো হবে সম্পূর্ণ ভুল ধারনা। “বৃক্ষ তোমার নাম কি, ফলে পরিচয়” তদ্রুপ, আপনি যদি কাজ করেন, তাহলে যে কোন ফরমেটেই সেটা বসালে চলবে। কাজই আপনার হয়ে সুপারিশ করবে, ফরমেট নয়।
৬। সিভিতে নামের পর বর্তমান ঠিকানা লিখতে হয়। বর্তমান ঠিকানা হচ্ছে আপনি যেখানে রাতে ঘুমান সেই ঠিকানা। বাবার বাড়ী, স্থায়ী ঠিকানা, শ্বশুর বাড়ীর ঠিকানাও সিভিতে পাওয়া যায়। এগুলো থাকলে হবে না।
৭। ফোন নম্বরে কান্ট্রি কোড না দেওয়া বিরাট ভুল। সিভি দিচ্ছেন দুবাই। দুবাই গিয়ে ইন্টারভিউ দিবেন? দুবাই থেকে আপনার সাথে যোগাযোগ করবে কিভাবে?
৮। সিভিতে অনেকেই মেইল আইডি পাওয়া যায়ঃ [email protected] , [email protected] নিশ্চিত থাকতে পারেন, এরকম আজে বাজে মেইল আইডি থাকলে ইহ জনমে ইন্টারভিউর ডাক পাবেন না।
৯। স্কাইপি আইডি অবশ্যই সিভিতে দিয়ে রাখুন। কোন রিক্রুইটারের সময় নেই, আপনাকে খুঁজে বের করে আপনার সাথে অনলাইনে ইন্টারভিউ অ্যারেঞ্জ করবে। হোয়াটস আপ ও ভাইবারও একটিভ রাখুন।
১০। লিঙ্কডইন রেডি রাখবেন সব সময়। যে কেউ যেন ভিজিট করলেই আপনার সম্পর্কে জেনে যায়। লিঙ্কডইন তৈরির জন্যে তৃতীয় পর্বের লিখাটি পড়ুন।
১১। স্কুলের ছবি দিয়ে চাকরীর জন্য আবেদন করা মস্ত বড় ভুল। আপনাকে একজন লোক যে ইন্টারভিউর জন্যে ডাকবে, সিভি খুলে সে যখন আপনার স্কুলের ছবি দেখবে, সে কি আপনাকে ডাকবে আর?
১২। একই সিভি চালিয়ে দিচ্ছেন সেলস, মার্কেটিং, ব্রান্ডিং, একাউন্ট যে কোন চাকরীর জন্য। ধরুন, আপনি মুরগী রাধবেন। একই মশলা দিয়ে কি গ্রিল, তান্দুরি, রোস্ট, কাবাব তৈরি সম্ভব? নিশ্চয়ই না। আপনাকেও প্রতিবার আবেদন করার সময় মশলা চেঞ্জ করতে হবে। নয়তো কেউ ডাকবে না।
১৩। আপনি চট্টগ্রাম যাবেন। যে বাসে লেখা যে বাসটি চট্টগ্রাম যাবে আপনি কি সেটিতে চড়বেন নাকি বাসস্ট্যান্ডের যে কোন বাসে চড়ে বসবেন? ভেবে দেখুনতো। লক্ষ্যহীন বাসে যদি আপনি না চড়েন তাহলে কিভাবে আশা করেন যে, যার ক্যারিয়ারের কোন লক্ষ্য নেই তার সিভি ফেলে দেয়া হবে না?
১৪। অনেকে ক্যারিয়ার অবজেক্টিভের মধ্যে "Seeking", "Need", "Looking for Position", "Good Organization" এই সব ওয়ার্ড ব্যবহার করেন। এগুলো মারাত্মক ভুল। অবজেক্টিভ হতে হবে শুধুই কাজ করার মেন্টালিটি। চাই, প্রয়োজন, দেন, খুঁজছি এগুলো দুর্বলদের কথা।
১৫। পিতার নাম, মাতার নাম, উচ্চতা, নাকের সংখ্যা, চোখের সংখ্যা, এগুলো আপনার চাকরীর সাথে সম্পর্কিত নয়। এগুলোর দরকার নেই। আড়াই ফিট লোককেও চাকরী পেতে দেখেছি তার যোগ্যতাবলে। অপ্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে লাভ নেই। সিভি বাছাইকারী পচা আলু পটলের মত সিভি ছুড়ে ফেলে দিবে। তার কাছে সিভি বাছাই নিত্যদিনের বোরিং কাজ। আপনার কাছে কিন্তু এটা আপনার ক্যারিয়ার।
১৬। গ্রামার ও বানান ভুল সিভির মারাত্মক আরেকটি ভুল। অনেকে বড় ভাইয়ের সিভিতে কি লিখা আছে তার বাংলা অর্থও জানেন না অথচ সেই সিভি পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
১৭। সিভির ফন্ট, বানান, মার্জিন, স্টাইল সব সময় একই রকম হতে হবে। এক এক জায়গায় এক এক ফন্ট, এক এক স্টাইল হলে বাজে দেখায়।
১৮। সিভির স্টেটমেন্ট গুলো SMART না হওয়া চাকরিজীবীদের সিভির খুব মারাত্মক ভুল। SMART দ্বারা বুঝাচ্ছে S= Specific (সুনির্দিষ্ট) M=Measurable(পরিমাপযোগ্য) A=Achievable (সাধনযোগ্য) R= Realistic (বাস্তব) T=Time Bounded (নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে)। আগের একটি পর্বে SMART সম্পর্কে লিখেছিলাম। দয়া করে পড়ে নিবেন। SMART স্টেটমেন্টের মাধ্যমে সিভিতে আপনার কাজগুলো এমন ভাবে দিন যাতে চাকরীদাতা বোঝে যে আপনি কত বড় বনের বাঘ।
১৯। নিজের ব্যাপারে বাড়িয়ে এমন কিছু লিখা যাবে না যেটা ডিফেন্স দিতে পারবেন না।
২০। সিভিতে স্ট্রং ওয়ার্ড না থাকা আরেকটি দুর্বল দিক। গুগল করে স্ট্রং ওয়ার্ড বসিয়ে নিন সিভিতে। সামনে এই সম্পর্কে একটি পুরো লিখা দিবো।
২১। ফ্রেশাররা সিভিতে ফুটিয়ে তুলতে পারে না যে তারাও কাজ করেছে ও কাজ জানে। ফ্রেশাররা কিভাবে এক্সপেরিয়েন্স লিখবেন জানতে প্রথম পর্বের লেখাটি পড়ুন।
২২। শিকার করা, মাছ ধরা এই ধরনের উদ্ভট শখের কথা সিভিতে থাকা যাবে না যার সাথে কাজের কোন সম্পর্ক নেই।
২৩। সিভিতে অনেকে চাকরীরত কোম্পানির ইতিহাস লিখে ফেলেন। কোম্পানির ওয়েবসাইট অ্যাড্রেস দিয়ে দিন। যার দরকার সে জেনে নিবে।
২৪। ফ্রেশারদের সিভিতে কো-কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটিজ থাকতে হবে। চার বছরে এক বছর সকলে ছুটিই কাটান। কিছু না কিছু এই সময়ে করতে হবে। মনে রাখবেন, মৃত্যুর পর ঘুমানোর অনেক সময় পাবেন। আলসেমি করে, ঘুমিয়ে মূল্যবান সময় নষ্ট করবেন না।
২৫। ট্রেনিং না থাকাটা সিভির আরেকটি বড় দুর্বলতা। ট্রেনিং করুন। সিভি স্ট্রং হবে। কাজে দিবে।
২৬। নিজের প্রফেশনাল এক্সপার্টজ গুলো ফুটিয়ে তুলতে না পারার কারনেও সিভি রিজেক্ট হয়।
২৭। কোন কোন ক্ষেত্রে আপনি পারদর্শী এবং কোন কোন ক্ষেত্রে কাজ করতে চান উল্লেখ না করাও সিভির বড় ভুল।
২৮। ভুল তারিখ থাকা সিভির আরেকটি ভুল। অনেকে এক চাকরী থেকে অন্য চাকরীতে গিয়ে তারিখ লিখতে ভুল করেন। এই ভুল ধরা পড়লে সিভি বাদ হবে।
২৯। চাকরীর গ্যাপ সিভি রিজেক্ট হওয়ার বড় কারন। চাকরীতে গ্যাপ পড়েছে হয়তো, কিন্তু কাজতো করেছেন। কি কি করেছেন গুছিয়ে লিখুন। কাজ দিয়ে গ্যাপ পুরা করে ফেলুন।
৩০। হয়তো বিক্রয় কর্মীর পদের জন্যে আবেদন করবেন। কিন্তু সিভির মধ্যে সাপ্লাই চেইন সম্পর্কে এতো কথা লিখা যে, সিভি বাছাই কারী কনফিউজ হয়ে গেল। পরিনামে আপনার সিভিটি তিনি বাদ দিয়ে দিবেন।
৩১। সিভির তথ্য গুলো পর্যায়ক্রমে না সাজালেও বাদ পড়ে যেতে পারে আপনার সিভিটি। ধরুন, আপনি বিবিএ পড়ার সময় ইন্টার্নশীপ করেছেন। তার মানে ইন্টার্নশীপটা বিবিসএ পড়ার একটা পার্ট। তাই আগে থাকবে বিবিএ পড়ার তথ্য, এরপর আসবে ইন্টার্নশীপ।
৩২। একটি ছেলের ছবি সিভিতে যুক্ত থাকার পরেও সে যখন আলাদা ভাবে লিখে যে তার সেক্স Male, সেটা খুব অদ্ভুত দেখায়।
৩৩। কত টাকা বেতন পান ও কত টাকা বেতন চান উল্লেখ করা সিভির আরেকটি ভুল। আগে হবে যাচাই বাছাই করতে হবে, সবশেষে আসবে মূল্য।
৩৪। থার্ড পার্সন ব্যবহার করে সিভি লিখবেন না। She, He এগুলো লিখবেন না। আপনি সিভিতে আপনাকে পরিচয় করাচ্ছেন। তাই সব কিছু ফাস্ট পার্সনে লিখুন।
৩৫। কেন আমি সেরা? কেন আমাকেই ডাকবেন ইন্টারভিউর জন্যে? এটা যদি সিভিতে ফুটে না ওঠে, আপনি ইন্টার্ভিউ কল পাবেন না। কিভাবে নিজেকে যোগ্য ভাবে তুলে ধরতে হবে তার জন্যে গত সপ্তাহের লেখাটি পড়ুন।
৩৬। আত্মীয় স্বজন, বেয়াই, কুটুম এদের সিভির রেফারেন্স বানাবেন না। সিভিতে দুইটি রেফারেন্স রাখুন যাদের সাথে পড়াশুনার সময় অথবা কর্মক্ষেত্রে পরিচয় হয়েছে।
৩৭। ভাষাগত দক্ষতা অংশে অনেকে টেবিল তৈরি করেন। এটা খুব বাজে লাগে দেখতে। আপনি বাংলা ও কাজ চালিয়ে নেবার মত ইংরেজি জানেন। এইটুক লিখলেই হবে।
৩৮। এমন কোন কম্পিউটার স্কিল দিবেন না যা আপনি জানেন না। এমন কোন সফটওয়ার স্কিল দিবেন না যা আপনি জানেন না।
৩৯। যাকে রেফারেন্স বানাচ্ছেন, তাদের অনুমতি নিন ও তাদের ফোন নম্বর ও মেইল আইডি দিন।
৪০। সবশেষে সাইন দিন যাতে বোঝা যায় সিভিটি আপনার। যেদিন সিভিটি পাঠাচ্ছেন, ওইদিনের ডেট দিন।
৪১। কভার লেটার না দিলে অনেক সময় আপনার সিভি বাদ পড়ে যাবে। অনেক জায়গায় তো কভার লেটার ছাড়া আপনি আবেদনই করতে পারবেন না।
৪২। কেউ জেপিজি ফরম্যাটে সিভি পাঠাবেন না। কারো সময় নেই, একাধিক ইমেজ নামিয়ে জোড়া দিয়ে দিয়ে আপনার সিভি দেখবে। সিভি পিডিএফে পাঠাবেন।
৪৩। যে পদের জন্য আবেদন করা হচ্ছে সেটি খামের উপর বা ইমেইলের সাবজেক্টে না লেখা আরেকটি বড় ভুল। তাড়াহুড়ার কারনে এই ভুলটি হয়।
৪৪। অনেকে মেইল করেন “My cv” নামের ফাইল। এবার আমি যদি ১০টা একই নামের ফাইল পাই, আমি কি করবো বলেন তো? ১০টা সিভিই খুলে না দেখে ফেলে দিবো। ইমেইলের ক্ষেত্রে অ্যাটাচমেন্টের ফাইল নেম চেঞ্জ করে দিন। ফাইল নেম হতে পারে নাম_সি জি পি এ_কোম্পানি নেম_পজিশন।
৪৫। সিভি অফসেটে প্রিন্ট করে পাঠানো ভালো। সব জায়গায় কৃপণতা ঠিক না।
৪৬। বেশি পুরানো তথ্য সিভিতে রাখবেন না। নতুন নতুন কাজ প্রোফাইলে যুক্ত হলে পূর্বের কাজগুলো সরিয়ে ফেলুন।
৪৭। সিভি ও ছবি আলাদা করে পাঠাবেন না। যিনি সিভি যাচাই বাছাই করেন, উনাকে কয়েকশ সিভি যাচাই বাছাই করতে হয়। আপনার সিভির সাথে ছবি জোড়াতালি উনি কোনদিন দিবেন না।
৪৮। ওয়ার্ড ফাইল কাউকে দিবেন না। এটা এডিট করা যায়। ইনফো সিকিউরিটির ব্যাপার আছে। যাকে তাকে সিভি দিবেন না।
৪৯। সিভি আপডেট করবেন প্রতিমাসে, নয়তো কি কাজ করেছেন মনে থাকবে না। আজ করি কাল করি করে করে সময় নষ্ট করবেন না।
৫০। নিয়মিত পোর্টালগুলোতে সিভি আপডেট না করা আরেকটি ভুল। অনেক সময় দেখা যায়, কোন কোম্পানি হয়তো ৫ বছরের এক্সপেরিয়েন্স ওয়ালা লোক চাচ্ছে। আপনারও ৫ বছরের অভিজ্ঞতাও আছে হয়তো। কিন্তু পোর্টালের সিভি লাস্ট ৬ মাস আপডেট করেননি। আপনি কিন্তু এমনিতেই পুল থেকে বাদ পড়ে যাবেন। সিস্টেম আপনার সিভি রিজেক্ট করে দিবে। সিস্টেমকে আপনি আপডেট দেননি। সিস্টেম কিন্তু আপনাকে ৪.৫ বছরের চাকরীর ক্ষেত্রে আপনার সিভি দেখাবে। ৫ বছরের অভিজ্ঞতা যারা চাচ্ছে তাদের থেকে আপনি বাদ পড়ে গেলেন। মনে রাখবেন, ভুল আপনার, সিস্টেমের নয়।
ভুলগুলো শুধরে ফেলুন, নয়তো মাশুল দিতে হবে। মনে রাখবেন, শরীরের যত্ন না নিলে যেমন শরীর অসুস্থ হয় তেমনি সিভির যত্ন না নিলে ক্যারিয়ার অসুস্থ হয়ে পড়বে। সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ লেখা পড়ার জন্যে।

Search
Categories
- Art
- Causes
- Crafts
- Dance
- Drinks
- Film
- Fitness
- Food
- Games
- Gardening
- Health
- Home
- Literature
- Music
- Networking
- Other
- Party
- Religion
- Shopping
- Sports
- Theater
- Wellness
Read More
নগ্ন হয়ে হাঁটতে পছন্দ করেন এই অভিনেত্রী
অনেক দিন থেকেই অভিনয়ে নিয়মিত নন ড্রিউ ব্যারিমোর। তবে অভিনয়ে না থাকলেও ২০২০ সালে ‘দ্য ড্রিউ...
‘পেগাসাস স্পাইওয়্যার’ যেভাবে আপনার মোবাইল ফোন নিয়ন্ত্রণ নেয়
তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে বিশ্বজুড়ে তথ্য হাতিয়ে নেয়ার নানা ধরনের অভিযোগ প্রায়ই গণমাধ্যমে পাওয়া যায়।...
Glyco Balance Chemist Warehouse: How It Is Worth The Effort?
In the event that you're somebody hoping to keep up with sound glucose levels or basically...
Stratos Male Enhancement: Examine Here Its Benefits and Detailed Review!
In the pursuit of enhanced sexual health and performance, numerous men are turning to natural...
Top WhiteFox Products You Need in Your Collection
In today’s tech-driven world, accessories play a vital role in enhancing our devices and...