ফ্ল্যাট বুকিং দেয়ার আগে কি করবেন?
Posted 2024-06-05 06:16:07
0
5KB
নীচের বিষয়গুলো খেয়াল রেখে, একজন ক্রেতা ফ্ল্যাট বুকিং দিলে বা কিনলে, ঠকে যাবার সম্ভাবনা নেই:-
০১। যেদিন ফ্ল্যাট বুকিং দেবেন, সেদিন টুকেন মানি হিসেবে ৫০ হাজার বা ২০ হাজার টাকা নিয়ে যাবেন না। যদি মনস্থির করেই থাকেন, অমুক প্রজেক্ট থেকে ফ্ল্যাট বুকিং দেবেন, তাহলে, তাদের কাছ থেকে নেয়া অমুক প্রজেক্টর ব্রশিয়্যরের শেষের পৃষ্ঠায় Terms & Condition এ দেখে নিন, কত % টাকা দিলে "নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তি সম্পাদন" করবে। যার সাথে ফ্ল্যাটের ব্যাপারে সমস্ত আলাপ হয়েছে, তাকে বলে দিন যে, আপনি কবে যাচ্ছেন অফিসে এবং ডাউন পেমেন্টের সব টাকাই পে- অর্ডার ( কি নামে করবেন তা টার্মস এন্ড কন্ডিশনে লেখা আছে) করে নিয়ে যাবেন। তাকে আরো জানিয়ে দিন, উল্লেখিত প্রজেক্টের সকল লিগ্যাল পেপারস যেন এক সেট ফটোকপি করে রাখে।
০২। লিগ্যাল পেপারসে আপনি যা যা দেখবেন:-
* কোম্পানীর সাথে জমির মালিকের চুক্তিপত্র। (এটি অনেক ডেভেলপার দিতে চায় না, আপনি যেভাবেই হোক, তা আদায় করে নেবেন)।
* Power of Attorney এর ফটোকপি।
* জমির মূল মালিকের মূল দলিলের ফটোকপি।
* জমির মূল মালিকের সিটি জরীপ + আর.এস অনুযায়ী নামজারী পর্চা, জমাভাগ, ডি.সি.আর (ডুপ্লিকেট কার্বন রশিদ) ও খাজনার রশিদ।
* বায়া দলিল ( মূল মালিকের আগে কারা কারা এ জমির মালিক ছিল, তাদের দলিল) গুলোর ফটোকপি।
* সকল পর্চা ( ঢাকা মহানগর পর্চা, আর.এস পর্চা, সি.এস পর্চা, এস,এ পর্চা) এর ফটোকপি।
* আপ টু ডেট খাজনার রশিদ।
* সিটি কর্পোরেশন হোল্ডিং ট্যাক্স এর ফটোকপি।
* রাজউকের প্ল্যান পাসের কপির ফটোকপি। (যদি পারেন কিছু টাকা দিয়ে রাজউক কর্তৃক প্ল্যান পাসের নকসাটিরও ফটোকপি নিয়ে নেবেন। এটি অনেক বড় একটি নক্সা, তাই ডেভেলপার ফটোকপি করিয়ে রাখে না। আপনি নীলক্ষেত বা দৈনিক বাংলার মোড়ে অনেক দোকান পাবেন, সেখান থেকে করিয়ে আনাবেন - প্রয়োজনে।
০৩। যদি ২ নং উল্লেখিত লিগ্যাল পেপারের কোন একটি না থাকে, তাহলে আপনাকে ফ্ল্যাট বুকিং না দেয়াই ভাল। যে কাগজটি নেই, সেটি ডেভেলপার জোগাড় করে যেদিন আপনাকে দিতে পারবে, সেদিনই ফ্ল্যাট বুকিং দিন।
০৪। যদি বুকিং মানি হিসেবে আপনি " ডাউন পেমেন্ট" করবেন বলে ঠিক করে রাখেন, তাহলে সেই ডাউন পেমেন্ট করার আগেই "আপনার সাথে ডেভেলপারের যে "দ্বি-পক্ষীয় চুক্তিটি" হবে" তার একটি নমূনা কপি দিতে বলেন। অধিকাংশ যেভেলপারই সেই চুক্তির কপিটি ইংরেজীতে করে। আপনি ইংরেজীতে ততটা দক্ষ না হলে, তাদেরকে বলুন, " বাংলা ফরম্যাটের চুক্তিনামা দিতে। কারন, ডেভেলপার ইংরেজী চুক্তিনামার অনেক টার্মসেই টেকনিক্যাল বা খুব সুক্ষভাবে কিছু ফাঁক ফুকর রাখে, যা ফ্ল্যাটক্রেতা ধরতে পারেনা। পরবর্তীতে সমস্যা হলে, সেই টার্মসটির কারনে ফ্ল্যাটক্রেতা কিছুই করতে পারে না।
০৫। বাংলায় বা ইংরেজীতে, যে কোন ফরম্যাটের চুক্তিনামার নমূনা কপি আপনাকে দিক না কেন, আপনি নিম্নে উল্লেখিত শর্তগুলো চুক্তিনামায় উল্লেখ আছে কি না তা দেখে নিনঃ-
* চুক্তিনামায় আপনার এবং ডেভেলপারের কর্তাব্যক্তির (যার সাথে জমির মালিকের চুক্তি ও আম-মোক্তার নামা হয়েছে) নাম, বাবা মার নাম,স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা, ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার উল্লেখ করেছে কিনা দেখুন।
* রাজউক কর্তৃক প্ল্যান পাসের নাম্বার সহ তারিখটি উল্লেখ আছে কি না দেখুন।
* যেদিন চুক্তি হচ্ছে, সেদিনের তারিখটি উল্লেখ আছে কিনা।
* ফ্ল্যাটের( ফ্ল্যাট মূল্য+ কার পার্কিং মূল্য (যদি কার পার্কিং কিনতে চান)+ ইউটিলিটি বা অন্যান্য কোন মূল্য) মূল্য ঠিকমত লেখা হয়েছে কি না, তা দেখুন। সবগুলোর আলাদা আলাদা দাম দর করে থাকলে, চুক্তিতেও আলাদাভাবে লিখে সর্বমোট দাম লিখতে বলবেন।
* চুক্তিপত্রে আপনার সাথে আলোচনা করে কিস্তির টাকা কিভাবে দেবেন, তা ঠিক হয়ে থাকলে, সেইভাবে লেখা আছে কি না দেখুন।
* ফ্ল্যাটটি কবে আপনাকে হস্তান্তর করা হবে, সেটির নির্দিষ্ট তারিখ ঠিকমত লেখা হয়েছে কি না দেখুন।
* জমির মালিকের সাথে ডেভেলপারের চুক্তিপত্রে প্রজেক্ট টি বসবাস উপযোগী করে কবে হস্তান্তর করা হবে, সেই তারিখের, সাথে আপনাকে ফ্ল্যাট হস্তান্তরের তারিখের মিল আছে কি না, তা খেয়াল করুন। যদি মিল না থাকে, তাহলে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করুন।
* আপনাকে নির্দিষ্ট সময় ফ্ল্যাট হস্তান্তর না করতে পারলে, সেই তারিখের পর ফ্ল্যাটভাড়া আপনাকে কত করে দেবে, তা উল্লেখ আছে কি না দেখুন। যদি তা উল্লেখ না থাকে, তাহলে তা আলোচনা করে বসিয়ে নিন। তবে, এক্ষেত্রে একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, চুক্তি অনুযায়ী আপনি সঠিক সময়ে কিস্তির টাকা পরিশোধের পরেই ফ্ল্যাটভাড়া পেতে পারেন।
* চুক্তিতে " ফ্ল্যাট মালিক সমিতির" জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমান টাকা ধরা হয়। সেটি কত তা খেয়াল করুন এবং সকলের চুক্তিপত্রে উক্ত টাকার পরিমান একই আছে কি না জেনে নিন।
* তফসিলে আপনার ফ্ল্যাট নং, কত তলায়,কোন্ পার্শ্বে - তা ঠিকমত উল্লেখ আছে কি না দেখুন।
০৬। ডেভেলপারের সাথে চুক্তিনামায় অবশ্যই " Feature & Amenities" অর্থ্যাৎ ডেভেলপার আপনার ক্রয়কৃত ফ্ল্যাটে কি কি নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করবে তা থাকতে হবে। বাংলায় হলে ভাল। সেগুলো ভালভাবে পড়ে তারপর চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন।
০৭। চুক্তিনামার শেষে, ডেভেলপারের ছাপানো ব্র্যশিয়্যার (যেটি দেখে আপনি ফ্ল্যাটটি বুকিং দিচ্ছেন, সেটিও "চুক্তিনামার একটি অংশ" -এ কথাটি যেন চু্ক্তিনামায় থাকে। অনেক সময়ই ডেভেলপার তার নিজ স্বার্থে ব্র্যশিয়্যার পরিবর্তন করে। তখন আপনাকে বিপাকে পড়তে হতে পারে।
০৮। একটি বিষয় খেয়াল রেখে চুক্তিনামায় কিস্তির টাকা পরিশোধের সিডিউল দেয়া উচিৎ। তা হলো, কিস্তির টাকা পরিশোধের সিডিউল অনুযায়ী নির্মাণ কাজ চলছে কিনা। সেটি তদারকি করা খুবই প্রয়োজন। আপনি চুক্তিনামা অনুযায়ী কিস্তির টাকা পরিশোধ করে যাচ্ছেন, কিন্তু ডেভেলপার সেই অনুপাতে নির্মাণ কাজ এগিয়ে নিচ্ছে না-- তাতে আপনি এক সময় বিপদে পড়তে পারেন। অধিকাংশ ডেভেলপার এক প্রজেক্টের টাকা অন্য প্রজেক্টে খাটায়। তাতে কোন অসুবিধা নেই যদি দেখেন আপনার বুকিংকৃত প্রজেক্টের নির্মাণ কাজ সিডিউল অনুযায়ী হচ্ছে। যদি এর ব্যত্যয় হয়, তাহলে আপনি ডেভেলপারকে মৌখিকভাবে এবং এ/ডি সহ রেজিষ্ট্রিকৃত চিঠির মাধ্যমে জানান। কারণ, ঢাকা সহ বড় বড় শহরগুলোতে এমন বহু নজির রয়েছে যে, কয়েক তলা পর্যন্ত ডেভেলপার নির্মাণ কাজ করে টাকার সমস্যা বা কোম্পানীর আভ্যন্তরীণ সমস্যা ইত্যাদির কারনে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে রেখেছে। এমনও হয়েছে যে, ডেভেলপার অফিস গুটিয়ে পালিয়েছে। তাই, পেমেন্ট সিডিউলে "নির্মাণ কাজের গতির উপর পেমেন্ট নির্ভরশীল"- এমন একটি কথা চুক্তিনামায় উল্লেখ করিয়ে নেবেন।
০৯। যে জমির উপরে এপার্টমেন্ট প্রজেক্টটি নির্মাণ হচ্ছে, সেই জমির "পাওয়ার অব এর্টনির" তফসিলের সাথে আপনার চুক্তিনামার তফসিল মিলিয়ে নেবেন। আপনি যে ফ্ল্যাটটি বুকিং দিচ্ছেন, সেটি "পাওয়ার অব এর্টনি"তে ডেভেলপারের কি না, তাও ভালভাবে যাচাই করে নেবেন। তাছাড়া, বুকিংকৃত ফ্ল্যাটটি যে তলায় সেই তলাটি রাজউক কর্তৃক প্ল্যান পাস কিনা-তাও যাচাই করবেন। রাজউকের প্ল্যানে যে তলায় যতটি ইউনিট, ডেভেলপার সেই তলায় ততটি ইউনিটই নির্মাণ করছে কিনা-তাও যাচাই করবেন। তা না হলে, পরবর্তীতে ইউটিলিটি (গ্যাস, বিদ্যুৎ ইত্যাদি) সংযোগে এবং রেজিষ্টি করতে বা ফ্ল্যাটের বিপরীতে লোন পেতে খুবই সমস্যায় পড়তে হবে।
১০। কোন ডেভেলপারই চুক্তিনামা রেজিষ্টি করতে অনীহা প্রকাশ করে। আপনি বুকিং দেয়ার আগেই বলে নিন, রেজিষ্ট্রিকৃত চুক্তিনামা করতে হবে। সাধারনত: কোন ডেভেলপারই ডাউনপেমেন্ট (৩০% বা ২৫%) না দিলে চুক্তি করতে চায় না। আপনি বলে দিন, চুক্তিনামা রেজিষ্ট্রির দিনই আপনি ডাউন পেমেন্টের টাকা পরিশোধ করবেন। তার আগে চুক্তিনামার খসড়া কপি আপনাকে দিতে বলুন। অধিকাংশ ফ্ল্যাটক্রেতা মাত্র ১০/১২ হাজার টাকা বাচাঁনোর জন্য কোটি টাকার ফ্ল্যাটটির চু্ক্তিনামা রেজিষ্ট্রি করে না। এতে ডেভেলপারের লাভ। কারন সরকারী নিয়ম অনুযায়ী, যে কোন চুক্তিনামাই রেজিষ্ট্রিকৃত হতে হবে। কোন ঝামেলায় পড়লে, তখন আপনি ই কিন্তু বিপদে পড়বেন।
১১। ফ্ল্যাটের কোন কিস্তি বা ডাউনপেমেন্ট কখনোই "নগদে" বা নগদ চেকে পরিশোধ করবেন না। অবশ্যই সেই ডেভেলপারের কোম্পানীর নামে "একাউন্ট পেয়ি" চেকে/ব্যাংক ড্রাফ্টে/ পে-অর্ডারে পরিশোধ করবেন। এতে পরবর্তীতে কোন ঝামেলা হলে,আইন আপনার পক্ষে থাকবে।
পুনশ্চঃ এর পরেও কোন কিছু জানতে চাইলে বা সহযোগিতার প্রয়োজন হলে, আমার হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারেন।
সকলে ভালো থাকবেন এবং নিরাপদে থাকবেন।
Gesponsert
Search
Nach Verein filtern
- Art
- Causes
- Crafts
- Dance
- Drinks
- Film
- Fitness
- Food
- Spiele
- Gardening
- Health
- Home
- Literature
- Music
- Networking
- Other
- Party
- Religion
- Shopping
- Sports
- Theater
- Wellness
Read More
A World of Sonic Breakfast Options
Breakfast is more than just the first meal of the day; it’s a moment that can set the tone...
ধানের তুষে সিলিকা
ধান ভাঙানোর পর আলাদা হয়ে যায় চাল ও তুষ। সেই তুষ পুড়িয়ে উৎপাদন হচ্ছে বায়োগ্যাস, তাতে চলছে...
Open up Thread Ponder of the Working day: What no cost representative signing or exchange bought yourself greatest thrilled inside Chicago Bears record?
Profitable the offseason is generally entertaining. Indeed, the notion is towards gain a...
South Carolina Cannabis Seed Regulations: What You Need to Know
As the conversation around cannabis continues to evolve across the United States, each state has...
সোশ্যালমিডিয়া প্লাটফর্ম-এ ছেলে-মেয়েদের ঈমান প্রতিনিয়ত নষ্ট হচ্ছে!
সোশ্যালমিডিয়া প্লাটফর্ম এমন ভয়াবহ একটি নির্জন স্থান, যেখানে হাজার হাজার ছেলে-মেয়েদের...