পতিতাপল্লীর ভয়াবহতার

0
4χλμ.
আমাদের যুবকদের চরিত্র সংরক্ষণ নিয়ে যখন আলোচনার প্রসঙ্গ আসে, তখন কয়েকটা পরিচিত ব্যপারেই সবাই কথা বলে - রিলেশনশীপ, সমকামীতা। কিন্তু একটা ভয়ঙ্কর ব্যাপার নিয়ে তেমন আলোচনা হয় না। সেটা হলো পতিতালয়ে যাওয়া।
জাস্ট ভাবতে পারবেন না, কী পরিমাণ স্কুল-কলেজে যাওয়া ছেলেরা এতে জড়িয়ে যাচ্ছে। অ্যাকচুয়াল পতিতার সাথে কথা না বললে এর ভয়াবহতার মাত্রার ব্যাপারে কোনো আইডিয়াই পাবেন না।
আমার একবার এক সর্দার(নীর) ইন্টারভিউ নেবার সুযোগ হয়েছিলো। তার কাছ থেকেই শোনা ব্যাপারটা।
ভার্সিটিতে আসার আগের ঘটনা এটা। কোচিংয়ে সকাল-বিকেল ক্লাস পড়ে গেছে, তার উপর রমজান মাস। তাই বাসায় না গিয়ে একবারে কোচিং শেষেই যাই। মাঝে সারাদিন শহর ঘুরে কাটে। একদিন বৃষ্টির কারণে আশ্রয় নিতে হলো এক পুরোনো বিল্ডিংয়ের বারান্দায়। বারান্দা বেশ ছোট, মানে ভীড়ের তুলনায়। এরমধ্যে এক ছেলে কথা বলা শুরু করলো আমার সাথে। হরেক রকম টপিক, সামনে আম বিক্রি হচ্ছে, বৃষ্টি এইসব। কিন্তু খেয়াল করলাম, ভয়েসটা কেমন মেয়েলী, অনেকটা হিজড়াদের মত। তারপর আমার জীবনের সবচেয়ে বিচিত্র অভিজ্ঞতাটা হলো।
ছেলেটা যা বললো তা এরকম, সে জন্মেছিল হিজড়া হয়ে। পরিবার নেয়নি, বাধ্য হয়ে শহরে চলে আসে। আশ্রয় হয় পতিতাপল্লীতে। কিন্তু হিজড়া হওয়ায় তেমন কোনো সার্ভিস দিতে পারত না। তারপর তার যখন ১৫ বছরের মত বয়স, কেউ একজন স্পন্সর করে ভারতে পাঠায়। তিন লাখ টাকা দিয়ে ট্রান্স সার্জারি করে হয়ে যায় মেয়ে। মেয়ে বলতে কেবল জননাঙ্গই নারীর মত, দেহের বাকি অংশ পুরুষ - সামান্য দাড়িও আছে। তার ভাষ্য অনুযায়ী, বহু হিজড়া এখন ভারত থেকে এই সার্জারি করে আসছে, ইভেন খুলনাতেও হয়। জীবিকার জন্য হিজড়ারা বহু কিছু করে, এটাও ওরকম। অনেক হিজড়া আবার যৌনতার স্বাদ নেবার জন্যও এই সার্জারিতে ঝুকছে। তবে সবার চেয়ে বড় ব্যাপার, এই ধরণের রুপান্তরিত পতিতাদের একটা ধরণের কাস্টমার শ্রেণী আছে, অনেকটা ফেটিশ টাইপের বলতে পারেন। এরাই নিয়মিত হয়ে ব্যাপারটা টিকিয়ে রেখেছে।
এবার মূল প্রসঙ্গে আসি। একটা সময় পর্যন্ত আমার ধারণা ছিল, পতিতাদের কাছে কেবল মধ্যবয়েসী পুরুষেরাই যায়। সেই ভুল ভেঙ্গে গেলো। ওই সর্দার বলল, আমাদের একটা বড় কাস্টমার শ্রেণী হচ্ছে এই স্কুল-কলেজের ছেলেরা। প্রমাণও করে দেখালো, অলমোস্ট র্যান্ডম একটা ইউনিফর্ম পরা ছেলেকে ডাক দিলো। দেখলাম ছেলেটা কুশল জিজ্ঞেস করলো।
সর্দার বলল, ছেলেটা গত সপ্তাহেও এসেছিল।
বললাম, রমজান মাস না?
বললো, তোমার কী মনে হয়, যারা এইসব করে তারা রোজা মানে?
ওর হাতে একটা হিন্দু 'ওম' ট্যাটু দেখালো। বলল, ভারত থেকে যে হিজড়াই সার্জারি করে আসে তাকে এই ট্যাটু করে দেয়।
সেদিন ওইসব শুনে ভয়ে আমার নাড়িভুড়ি পর্যন্ত জমে গিয়েছিল।
সেই সর্দারের বক্তব্য আর পরবর্তিতে কিছু সিনিয়রের কথা থেকে ব্যাপার যেটা বুঝলাম, ছাত্রদের একটা অংশ বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে তো যাচ্ছেই, সাথে আরো একটা ব্যাপার আছে।
ম্যাক্সিমাম কিশোর যারা ব্যাভিচারে জড়াচ্ছে, আমাদের ধারণা তারা সব রিলেশনের মাধ্যমেই জড়াচ্ছে। ব্যাপারটা ভুল। মেয়েরা হাইপারগামাস, ফলে একজনকে বেড পর্যন্ত আনতে যে লুক, স্কিল আর কনফিডেন্স দরকার তা ৯০% ছেলের মধ্যে থাকে না।
কিন্তু পর্নের এই জলের মত সহজতার যুগে সে তার ক্লাসমেটদেরকে কত আনন্দে দিন কাটাতে দেখছে। আর বিয়ের অপশন অসম্ভব, কারণ তার বড় ভাইকে দেখছে ত্রিশে বিয়ে করতে। একটা বিয়ে কিশোরের কাছে কেবল সেক্সের জন্য হলেও কয়েক হাজার ব্যাপার জড়িত, শ্যালকের ঈদ সালামী পর্যন্ত চিন্তা করা লাগে। তার ভাবীকে দেখছে মায়ের সাথে অশান্তি করতে।
সে কয়েকদিন হলো সেক্স ডিসকভার করেছে, সে কেবল ওটাই চায়, সাংসারিক ঝামেলা চায় না। আবার মেয়ে পটানোর মত কিছু তার নেই। কিন্তু সেক্স তো লাগবেই।
তাই লাস্ট অপশন এইসব পতিতারা, মাত্র কয়েকশ টাকা হলেই হলো।
জেনেছিলাম, এইসব পতিতাপল্লীতে অল্পবয়েসী ছেলেরা গেলে তাদের ব্যাপক খাতির করে।
আর একবার ওই আইস ব্রেক করলেই হলো। ছেলেটা আসক্ত হয়ে যাবে।
'সেভ মাই সউল' ডকুমেন্টারীতে দেখেছিলাম, কোরিয়াতে কয়েক বছর আগ পর্যন্ত বড় ভাইয়েরা ছোট ভাইকে গিফট হিসেবে পতিতা ভাড়া করে দিতো
এমনও শুনেছি, স্বামী বিদেশে ভিসা জটিলতায় পড়েছে, বউ দেশে সাবস্ক্রিপশন সার্ভিস চালাচ্ছে। মাসে দশ হাজারের মত টাকা পার পার্সন, অন-ডিমান্ড সার্ভিস। কাস্টমারদের মধ্যে ইন্টার পড়ুয়া ছেলে থেকে লীগের বড় নেতারা পর্যন্ত আছে।
****
এই সমস্যার সমাধান করা অনেক কঠিন। কারণ রিলেশনের বেলায় যেমন কত প্রুফ থাকে, এখানে কিছুই থাকে না। কোনো পিছুটান নেই। ম্যাসেঞ্জার চেক করে অভিভাবক যে দুটো চড়থাপ্পড় দিয়ে ফিরিয়ে আনবে, তারও উপায় নেই।
এক ব্যাপক মাত্রার ধার্মিকতা ছাড়া ফেরানোর পথ থাকে না। যে কিশোর একবার ডিস্কোভার করে ফেলেছে, নারীদেহের বিকল্প কী দিতে পারবেন আপনি?
এ তো আইস্ক্রিম নয় যে বলবেন, বেশী খাসনে - ঠান্ডা লেগে যাবে। বা যারা খারাপ মেয়েছেলের কাছে যায় তাদের এসটিডি হয়। অনার্স পড়ুয়া ছেলের এইডস হবার মত ঘটনাও ঘটেছে।
*****
আমাদের বা এইসব ছেলেদের বাপেদের বিন্দুমাত্র আইডিয়া নেই যে এই জেনারেশনের সাথে কী চলছে। তারা ছোটবেলায় ভাতের কষ্ট করেছে, তার ছেলেদের করা লাগছে না, কেবল এইটুকুই তারা কেয়ার করে। তাদের কাছে ছেলেপেলে বড়ই হয়নি।
একটা জিনিস মনে রাখা দরকার, শাস্তি ছাড়া একটা দশফুটের ক্লাসরুমেও ডিসিপ্লিন আসে না। সেখানে পুরো সমাজ? লাস্ট কবে শুনেছেন যে কোনো ব্যাভিচারির শাস্তি হয়েছে?
আগে একটা ফ্যামিলির কেউ পালিয়ে বিয়ে করলেও পত্রিকায় নিউজ আসত। এখন ওসব নেই।
শাস্তি নেই, পাপ থেকে বেঁচে থাকলে তার কোনো বাহ্যিক রিওয়ার্ড নেই - তাহলে একটা ছেলে কী লিভারেজের জন্য পবিত্র থাকার কথা ভাববে?
কেউ সমাধান আনে তাকওয়া- খোদাভীতি। আচ্ছা, একটা ১৫ বছরের কিশোরের কাছ থেকে কোন লেভেলের তাকওয়া আশা করেন আপনি?
****
ধর্মীয় দিকেও দায় কী কম? আল্লাহ সব মাফ করে দেয় - এই ফিলোসফি কয়েকশ গুণ বেশী দেখা যাচ্ছে গত কয়েক বছরে। আগেপিছে কিছু নেই, গণহারে বলা হচ্ছে, যা ইচ্ছে করো, আল্লাহ ক্ষমাশীল - তুমি কে জাজ করার?
হলে একটা ছেলে থাকত। কোনোভাবে জেনেছে আমি হ্যাকিং নিয়ে নাড়াচাড়া করি। আর সব নতুন ওয়ানাবি হ্যাকার তো কেবল একটা জিনিসই চেনে - কালি লিনাক্স। পাগল করে দিচ্ছে একরকম। যতই বোঝাই আগে ওপেন সোর্স টুল আর সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং শেখ - তার কালি লিনাক্সই চাই। নিরুপায় হয়ে একদিন ইন্সটল দিয়ে দিলাম। সাথে হার্ডডিস্ক ফরমাট দেওয়া লাগলো, বহু বছরের ফাইল কালেকশন হাওয়া।
ভেবেছিলাম বিদায় হয়েছে। উলটো আমার ফ্যান হয়ে গেলো। ফাইল গেলে যাক - কালি লিনাক্স তো চলছে। সেই থেকে পরিচয়।
মাঝে ছেলেটা মারাত্বক আপসেট হয়ে গেলো। ক্লাসে যায় না, ইনকোর্স পর্যন্ত বাদ যাচ্ছে। দেখা হলে যা বললো, হুজুরের কাছে শুনেছে বিয়ের সময় পাস্ট গোপন করতে, ইভেন জিজ্ঞেসও নাকি করা যাবে না। একদম ভেঙ্গে পড়েছে।
তার কথা ছিলো, "ভাই তাহলে এই দাঁতে দাঁত চেপে পবিত্র থেকে কী হলো? আমার জন্ম ঢাকাতে, আপার মিডল ক্লাস ফ্যামিলি - কোন সুযোগটা আমার ছিলো না? আপনাদের মত হুজুর সিনিয়রদের কথা শুনেছি, এখন হুজুররাই বলছে ওসব ব্যাপার না। আল্লাহ সব মাফ করে দেয়।"
কী উত্তর দেবো? জাতীয় সমস্যা। আর বোঝাতে যাই না। উত্তর নেই।
****
যারা এখনো পবিত্র রয়েছেন, ভাবছেন এতে কী লাভ হলো? বা আমি তো সুযোগ পাইনি বলে সাধু।
আপনাকে বলি, যে সুযোগের অভাবে সাধু, স্টিল সে সাধু। যে সুযোগের অভাবে খুন করতে পারেনি, হাজার খুনের ইচ্ছের কথা বললেও আমরা কী তাকে খুনী বলতে পারি?
মনে রাখবেন, আপনার যে বন্ধু ব্যাভিচারে জড়িয়ে অপবিত্র হয়েছে, আপনি চাইলে এখনি তার মত হতে পারেন। কিন্তু সে কী হাজারবার চাইলেও এই জীবনে আপনার মত হতে পারবে?
আপনি লাইফে এখনো কিছু করতে না পারেন, এই পবিত্রতাই আপনার সবচে বড় ফ্লেক্স!
Like
1
Προωθημένο
Αναζήτηση
Κατηγορίες
Διαβάζω περισσότερα
άλλο
Styrene Butadiene Styrene Price Trend Analysis: Key Insights on Market Dynamics, Charts, and Future Forecasts
    1. Introduction to the Styrene Butadiene Styrene Price Trend Styrene Butadiene...
από Amanda Williams 2024-11-07 06:28:31 0 3χλμ.
άλλο
Top SAP Certifications That Can Land You a Job in 2024
In today's competitive job market, having specialized certifications can significantly boost your...
από Rohit Kulkarni 2024-10-03 07:26:16 0 2χλμ.
Health
সন্তান কী পড়বে, বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা তাকে দেওয়া উচিত
ছোট বাচ্চাটা হয়তো খেলাচ্ছলেই খেলনা গাড়িটা ভেঙে ভেতরের মোটরটা বের করে ফেলেছে। তাই দেখে...
από Faria Afrin 2022-10-17 12:27:09 0 4χλμ.
Drinks
Cách chăm sóc mai vàng trong mùa mưa
  Mai vàng không chỉ là biểu tượng của mùa Tết ở miền Nam...
από Nguyenbich Nguyenbich 2024-08-13 06:36:59 0 6χλμ.
άλλο
এনা পরিবহনের সকল কাউন্টার নাম্বার
এনা পরিবহন (প্রাঃ) লিমিটেড ( Ena Transport Private Limited) ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ ৩০...
από Suveccha News 2024-06-24 18:11:51 0 8χλμ.