পাশের বাসার ভাবির দরজায় গিয়ে নক করলাম। ভাবির শ্বাশুড়ি আমার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে। তিনি কনফিউশানে আছেন আমাকে ভিতরে ঢুকতে বলবেন না-কি বাইরে থেকেই বিদায় করে দিবেন।

শেষমেশ পান চিবানো থামিয়ে এক গাদা রস গিলতে গিলতে বললেন, 'কী হয়েছে, রাজিব ?'

-ভাবি, আসতে বলছিলেন।

তিনি সরে দাঁড়ালেন। আলী বাবা ও চল্লিশ চোর গল্পের মতো চিচিং ফাঁক স্টাইলে দরজাটা খুলে গেল। আমি ভিতরে গিয়ে বসলাম।

ভাবির মেয়ে অবন্তি বসে বসে কার্টুন দেখছে। আমার দিকে কেমন যেন অবাক দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে। আমি ওর কার্টুন চুরি করে নিয়ে যেতে পারি চেহারায় এমন একটা আতঙ্কের ছাপ এনে বলল, 'আঙ্কেল, তুমি কী আমাদের বাসায় কার্টুন দেখতে আসছ?'

-না মামণি, তোমার আম্মু আসতে বলছে।

আমার কথা শুনেই মেয়েটা আম্মু আম্মু বলে চিল্লাতে চিল্লাতে ভিতরে ঢুকে গেল।

একা একা বসে মোটু পাতলু দেখছি। কিন্তু হঠাৎ করেই কী জন্য যেন মনে হলো মোটু ক্যারেক্টারটা আমার সামনে চলে এসেছে। ভালো করে খেয়াল করতেই দেখলাম কার্টুনের মোটু না, ভাবির শ্বশুর মোটু আঙ্কেল, মানে জমসেদ আঙ্কেল দাঁড়ানো।

-কী ব্যাপার রাজিব, তোমার আব্বু ভালো আছেন?

-আসসালামু আলাইকুম আঙ্কেল, জি ভালো আছেন। আপনি কেমন আছেন?

-আল্লাহ রাখছেন। তা, এত সকাল সকাল কী মনে করে?

-জি..ভাবি আসতে বলছিলেন।

-ওহ্...

ওহ্ বলেই জমসেদ আঙ্কেল ভিতরে চলে গেলেন। আঙ্কেল ভিতরে যেতে না যেতেই আঙ্কেলের মেয়ে পুষ্পিতা বেরিয়ে আসল। দূরে ডাইনিং টেবিলের পাশে দাঁড়িয়ে মেয়েটা আমার দিকে কেমন যেন সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে।

পুষ্পিতা মেয়েটা দেখতে খারাপ না। একসময় আমার ভালোই লাগত। কিন্তু আফসোস! প্রেম করে একটা বখাটের সাথে। আসলেই মেয়েরা কখনো ভালো ছেলেদের সাথে প্রেম করে না। তারা খারাপ ছেলেদেরকে ভালো করবার এক মহান ব্রত নিয়ে জন্মায়। নইলে কী আর আমার মতো একটা ভালো ছেলের এখনো সিঙ্গেল থাকা লাগে!

পুষ্পিতা দূর থেকেই বলল, 'রাজিব ভাইয়া, কেমন আছেন?

-ভালো। তুমি কেমন আছ?

-জি, ভালো। তা, হঠাৎ আমাদের বাসায় যে?

-ভাবি আসতে বলছেন।

-ওহ্...

-ভাবি কই?

-মেহেদী লাগায়।

-ছি! তুমি না আসলেই একটা...

-আশ্চর্য! ছিছি করেন ক্যান, হাতে মেহেদী লাগানো যাবে না না-কি?

-ওহ্..তাই বলো! ভেঙে বলবা না? তা, মেহেদী ভাই কই?

-ভাইয়া, গোসলে।

পুষ্পিতা যেতে না যেতেই মেহেদী ভাই এসে হাজির। মেহেদী ভাই আর আমার বড় আপু ব্যাচমেট ছিল। কলেজে পড়ার সময় মেহেদী ভাই সারাদিন আমাদের বাসার আশেপাশে ঘুরঘুর করত। টাওয়েলে মাথা মুছতে মুছতে মেহেদী ভাই জিজ্ঞেস করল, 'কিরে রাজিব, কী অবস্থা?'

-জি ভাই, ভালো। আপনি কেমন আছেন?

-আর থাকা! বিবাহিত মানুষদের থাকা-টাকা নাই রে..এখনোও তো বিয়ে করিসনি, বুঝবি না।

-হেহেহেহে..

-হাসিস না, যা বলছি সত্যি। তা, মিতুর কী অবস্থা?

-আপু আসবে তো, নেক্সট উইক। বাসায় আইসেন।

-তা, হঠাৎ সকাল সকাল আমাদের বাসায়? কখনো তো আসিস না!

-ভাবি আসতে বলছিলেন।

-ভাবি!

-জি, ভাই।

মেহেদী ভাই ভিতরে যাওয়ার আগে আমার দিকে এমন একটা লুক দিয়ে গেলেন যেন আমি তার বউটাকে চুরি করে নিয়ে যেতে এসেছি।

বুঝলাম না বেশি সকাল সকাল চলে আসলাম না-কি! সবাই আমার দিকে এমন উদ্ভট উদ্ভট লুক দিচ্ছে কীজন্য? অবশ্য ছুটির দিন-- বেলা বারোটাও কারো কারো কাছে ভোর।

আরো পাঁচ মিনিট পর ভাবি আসলেন। কিছুটা শঙ্কিত, কিছুটা চিন্তিত, কিছুটা বিরক্ত মুখ ভঙ্গি করে বললেন, 'কী ব্যাপার রাজিব, কেমন আছ?'

-ভালো, আপনি?

-হুম, ভালো। তা, আমি না-কি তোমাকে আসতে বলছি?

-জি ভাবি।

-কিন্তু কখন! আমার তো মনে পড়ে না।

-জি ভাবি, বলছেন।

আমার এমন কনফিডেন্টলি এন্সার শুনে ভাবি ভিরমি খেয়ে গেলেন। একটু নিচু সুরে বললেন, 'সিরিয়াসলি?'

-জি ভাবি, সিরিয়াসলি।

-কিন্তু কখন..বলো তো একটু?

-কেনো! আপনিই না গতকাল রাতে ফেসবুকে পোস্ট দিলেন...বন্ধুরা আজ খিচুড়ি রান্না করলাম, যারা যারা খেতে চাও এক্ষুনি বাসায় চলে আসো।

ভাবি ছেলেমানুষের মতো রাগে চোখ-মুখ শক্ত করে বললেন, 'তুমি সে জন্য এই সকাল সকাল বাসায় চলে আসছ?'

-জি ভাবি, রাতেও একবার আসছিলাম। আপনারা বোধ হয় গতকাল একটু তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ছিলেন। নিচে কলাপসিবল গেটে অনেকক্ষণ ডাকাডাকি করলাম; কিন্তু কেউ খুলল না।

ভাবি রাগে আমার দিকে সাধু-সন্ন্যাসীদের মতো তাকিয়ে আছেন। আমি যেকোনো সময় ভস্ম হয়ে যেতে পারি। ভস্ম হই আর যাই হই আজকে ভাবির হাতের খিচুড়ি না খেয়ে আমি কোথাও যাচ্ছি না। তবে বুঝতেছি না ভাবি খিচুড়ি খাওয়াবেন কি-না।
পাশের বাসার ভাবির দরজায় গিয়ে নক করলাম। ভাবির শ্বাশুড়ি আমার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে। তিনি কনফিউশানে আছেন আমাকে ভিতরে ঢুকতে বলবেন না-কি বাইরে থেকেই বিদায় করে দিবেন। শেষমেশ পান চিবানো থামিয়ে এক গাদা রস গিলতে গিলতে বললেন, 'কী হয়েছে, রাজিব ?' -ভাবি, আসতে বলছিলেন। তিনি সরে দাঁড়ালেন। আলী বাবা ও চল্লিশ চোর গল্পের মতো চিচিং ফাঁক স্টাইলে দরজাটা খুলে গেল। আমি ভিতরে গিয়ে বসলাম। ভাবির মেয়ে অবন্তি বসে বসে কার্টুন দেখছে। আমার দিকে কেমন যেন অবাক দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে। আমি ওর কার্টুন চুরি করে নিয়ে যেতে পারি চেহারায় এমন একটা আতঙ্কের ছাপ এনে বলল, 'আঙ্কেল, তুমি কী আমাদের বাসায় কার্টুন দেখতে আসছ?' -না মামণি, তোমার আম্মু আসতে বলছে। আমার কথা শুনেই মেয়েটা আম্মু আম্মু বলে চিল্লাতে চিল্লাতে ভিতরে ঢুকে গেল। একা একা বসে মোটু পাতলু দেখছি। কিন্তু হঠাৎ করেই কী জন্য যেন মনে হলো মোটু ক্যারেক্টারটা আমার সামনে চলে এসেছে। ভালো করে খেয়াল করতেই দেখলাম কার্টুনের মোটু না, ভাবির শ্বশুর মোটু আঙ্কেল, মানে জমসেদ আঙ্কেল দাঁড়ানো। -কী ব্যাপার রাজিব, তোমার আব্বু ভালো আছেন? -আসসালামু আলাইকুম আঙ্কেল, জি ভালো আছেন। আপনি কেমন আছেন? -আল্লাহ রাখছেন। তা, এত সকাল সকাল কী মনে করে? -জি..ভাবি আসতে বলছিলেন। -ওহ্... ওহ্ বলেই জমসেদ আঙ্কেল ভিতরে চলে গেলেন। আঙ্কেল ভিতরে যেতে না যেতেই আঙ্কেলের মেয়ে পুষ্পিতা বেরিয়ে আসল। দূরে ডাইনিং টেবিলের পাশে দাঁড়িয়ে মেয়েটা আমার দিকে কেমন যেন সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে। পুষ্পিতা মেয়েটা দেখতে খারাপ না। একসময় আমার ভালোই লাগত। কিন্তু আফসোস! প্রেম করে একটা বখাটের সাথে। আসলেই মেয়েরা কখনো ভালো ছেলেদের সাথে প্রেম করে না। তারা খারাপ ছেলেদেরকে ভালো করবার এক মহান ব্রত নিয়ে জন্মায়। নইলে কী আর আমার মতো একটা ভালো ছেলের এখনো সিঙ্গেল থাকা লাগে! পুষ্পিতা দূর থেকেই বলল, 'রাজিব ভাইয়া, কেমন আছেন? -ভালো। তুমি কেমন আছ? -জি, ভালো। তা, হঠাৎ আমাদের বাসায় যে? -ভাবি আসতে বলছেন। -ওহ্... -ভাবি কই? -মেহেদী লাগায়। -ছি! তুমি না আসলেই একটা... -আশ্চর্য! ছিছি করেন ক্যান, হাতে মেহেদী লাগানো যাবে না না-কি? -ওহ্..তাই বলো! ভেঙে বলবা না? তা, মেহেদী ভাই কই? -ভাইয়া, গোসলে। পুষ্পিতা যেতে না যেতেই মেহেদী ভাই এসে হাজির। মেহেদী ভাই আর আমার বড় আপু ব্যাচমেট ছিল। কলেজে পড়ার সময় মেহেদী ভাই সারাদিন আমাদের বাসার আশেপাশে ঘুরঘুর করত। টাওয়েলে মাথা মুছতে মুছতে মেহেদী ভাই জিজ্ঞেস করল, 'কিরে রাজিব, কী অবস্থা?' -জি ভাই, ভালো। আপনি কেমন আছেন? -আর থাকা! বিবাহিত মানুষদের থাকা-টাকা নাই রে..এখনোও তো বিয়ে করিসনি, বুঝবি না। -হেহেহেহে.. -হাসিস না, যা বলছি সত্যি। তা, মিতুর কী অবস্থা? -আপু আসবে তো, নেক্সট উইক। বাসায় আইসেন। -তা, হঠাৎ সকাল সকাল আমাদের বাসায়? কখনো তো আসিস না! -ভাবি আসতে বলছিলেন। -ভাবি! -জি, ভাই। মেহেদী ভাই ভিতরে যাওয়ার আগে আমার দিকে এমন একটা লুক দিয়ে গেলেন যেন আমি তার বউটাকে চুরি করে নিয়ে যেতে এসেছি। বুঝলাম না বেশি সকাল সকাল চলে আসলাম না-কি! সবাই আমার দিকে এমন উদ্ভট উদ্ভট লুক দিচ্ছে কীজন্য? অবশ্য ছুটির দিন-- বেলা বারোটাও কারো কারো কাছে ভোর। আরো পাঁচ মিনিট পর ভাবি আসলেন। কিছুটা শঙ্কিত, কিছুটা চিন্তিত, কিছুটা বিরক্ত মুখ ভঙ্গি করে বললেন, 'কী ব্যাপার রাজিব, কেমন আছ?' -ভালো, আপনি? -হুম, ভালো। তা, আমি না-কি তোমাকে আসতে বলছি? -জি ভাবি। -কিন্তু কখন! আমার তো মনে পড়ে না। -জি ভাবি, বলছেন। আমার এমন কনফিডেন্টলি এন্সার শুনে ভাবি ভিরমি খেয়ে গেলেন। একটু নিচু সুরে বললেন, 'সিরিয়াসলি?' -জি ভাবি, সিরিয়াসলি। -কিন্তু কখন..বলো তো একটু? -কেনো! আপনিই না গতকাল রাতে ফেসবুকে পোস্ট দিলেন...বন্ধুরা আজ খিচুড়ি রান্না করলাম, যারা যারা খেতে চাও এক্ষুনি বাসায় চলে আসো। ভাবি ছেলেমানুষের মতো রাগে চোখ-মুখ শক্ত করে বললেন, 'তুমি সে জন্য এই সকাল সকাল বাসায় চলে আসছ?' -জি ভাবি, রাতেও একবার আসছিলাম। আপনারা বোধ হয় গতকাল একটু তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ছিলেন। নিচে কলাপসিবল গেটে অনেকক্ষণ ডাকাডাকি করলাম; কিন্তু কেউ খুলল না। ভাবি রাগে আমার দিকে সাধু-সন্ন্যাসীদের মতো তাকিয়ে আছেন। আমি যেকোনো সময় ভস্ম হয়ে যেতে পারি। ভস্ম হই আর যাই হই আজকে ভাবির হাতের খিচুড়ি না খেয়ে আমি কোথাও যাচ্ছি না। তবে বুঝতেছি না ভাবি খিচুড়ি খাওয়াবেন কি-না।🙊 💙
Like
Haha
Yay
21
0 Σχόλια 0 Μοιράστηκε 235 Views 0 Προεπισκόπηση