সব্জির দুঃখ:

কলমে — সোমাশ্রী পাল চন্দ
ফুলকপি দিয়ে ডিম, মাছ, মাংস, পনির, রোস্ট, স্যুপ, পাতুরি,ভাজা, বড়া, বাটা, ঘন্ট, ঘ্যাট, চচ্চড়ি, ভর্তা, চাটনি বানানোর যে হারে এক্সপেরিমেন্ট চলছে। তা দেখে সব্জি মহল বিরক্ত।
আলু দুঃখ করে বললো, আমি সারাবছর থেকেও এতো ভালোবাসা পাইনা রে ভাই।
মুলো বললো, আমাকে তো একমাস সাইডেই রাখে। লোকে এতো পাপ করে তাতে কিসু না, কিন্তু মাঘে মুলো খেলেই দোষ।
বেগুন বললো আমার তো গুণ নেই মানলাম কিন্তু বাঁধাকপির উন্নতি না হওয়ার কারণ কী? বাঁধাকপি গড়িয়ে এসে বললো, বেঁধে দিয়েছে যে আগেই। কে যে বাঁধলো,কেন বাঁধলো জানিনা। বাঁধা কাটাতে কাচকলা জোতিষীকে দেখালাম। বললো তিন মাথার মোড়ে চারটে কলাগাছ পুঁততে হবে। বাঁধাকপি হয়ে কলাগাছ পোঁতা কি চাট্টিখানি কথা?

দূর থেকে ধনেপাতা ঝুঁটি দুলিয়ে এসে সাঁই করে অভিযোগ জানালো, আমারও তো কোনো উন্নতি নেই। সব তরকারিতে লোকে ছড়াচ্ছে শুধু। নিজের কোনো আইডেন্টিটি নেই? মাঝে মাঝে আমি গঙ্গা জল না ধনেপাতা কনফিউসড হয়ে যাই।

ফুলকপি এতক্ষন ছিলোনা। এইবারে এসেই হাঁক দিলো, হচ্ছে কী এখানে? সব্জি মহলের সমবেত কণ্ঠস্বর—
তোমার বাড়বাড়ন্ত আর যে নেওয়া যাচ্ছে না ভাই। মানে মানে এইবারে কেটে পড়ো তো।
ফুলকপি মাথা চুলকে বলে উঠলো, তোমরা ঐটুকু দেখলে আর আমার দুঃখটা দেখলে না?
সব্জিরা অবাক! মানে?
— মানে এই যে আমি তো ফুল। গোলাপ ফুলকে কোনোদিন রোস্ট হতে দেখেছো? তারপর এই যদি শোনো ডিম দিয়ে গাঁদা ফুলের ঝোল। মানতে পারবে? চন্দ্রমল্লিকার চচ্চড়ি শুনেছো? তারপর দেখো, ফুলসজ্জার খাটে ফুলকপি থাকে? থাকে না। অথচ বিয়ের দুদিন পর থেকেই, ওগো বাজার থেকে ফুলকপি এনো গো। ক্যান প্রপোজে আমাকে তো ডাকিস নি! এইবার আমার দরকার! নিজের জীবন ভাজাভাজা করার সময় এদের আমাকে ভাজা দরকার।

সব্জিমহলের গুনগুন, ফিসফাস— "হ্যাঁ ঠিকই তো... সত্যিই তো..."
ফুলকপি বললো, তাহলেই বোঝো...
সকলে বলে উঠলো, সত্যিই ভাই। আমাদের বুঝতে ভুল হয়েছে। তুমি থাকো, থাকো।
ফুলকপি ফিক করে মুচকি হেসে ফিসফিসিয়ে বললো, গাধা।
সব্জির দুঃখ: কলমে — সোমাশ্রী পাল চন্দ ফুলকপি দিয়ে ডিম, মাছ, মাংস, পনির, রোস্ট, স্যুপ, পাতুরি,ভাজা, বড়া, বাটা, ঘন্ট, ঘ্যাট, চচ্চড়ি, ভর্তা, চাটনি বানানোর যে হারে এক্সপেরিমেন্ট চলছে। তা দেখে সব্জি মহল বিরক্ত। আলু দুঃখ করে বললো, আমি সারাবছর থেকেও এতো ভালোবাসা পাইনা রে ভাই। মুলো বললো, আমাকে তো একমাস সাইডেই রাখে। লোকে এতো পাপ করে তাতে কিসু না, কিন্তু মাঘে মুলো খেলেই দোষ। বেগুন বললো আমার তো গুণ নেই মানলাম কিন্তু বাঁধাকপির উন্নতি না হওয়ার কারণ কী? বাঁধাকপি গড়িয়ে এসে বললো, বেঁধে দিয়েছে যে আগেই। কে যে বাঁধলো,কেন বাঁধলো জানিনা। বাঁধা কাটাতে কাচকলা জোতিষীকে দেখালাম। বললো তিন মাথার মোড়ে চারটে কলাগাছ পুঁততে হবে। বাঁধাকপি হয়ে কলাগাছ পোঁতা কি চাট্টিখানি কথা? দূর থেকে ধনেপাতা ঝুঁটি দুলিয়ে এসে সাঁই করে অভিযোগ জানালো, আমারও তো কোনো উন্নতি নেই। সব তরকারিতে লোকে ছড়াচ্ছে শুধু। নিজের কোনো আইডেন্টিটি নেই? মাঝে মাঝে আমি গঙ্গা জল না ধনেপাতা কনফিউসড হয়ে যাই। ফুলকপি এতক্ষন ছিলোনা। এইবারে এসেই হাঁক দিলো, হচ্ছে কী এখানে? সব্জি মহলের সমবেত কণ্ঠস্বর— তোমার বাড়বাড়ন্ত আর যে নেওয়া যাচ্ছে না ভাই। মানে মানে এইবারে কেটে পড়ো তো। ফুলকপি মাথা চুলকে বলে উঠলো, তোমরা ঐটুকু দেখলে আর আমার দুঃখটা দেখলে না? সব্জিরা অবাক! মানে? — মানে এই যে আমি তো ফুল। গোলাপ ফুলকে কোনোদিন রোস্ট হতে দেখেছো? তারপর এই যদি শোনো ডিম দিয়ে গাঁদা ফুলের ঝোল। মানতে পারবে? চন্দ্রমল্লিকার চচ্চড়ি শুনেছো? তারপর দেখো, ফুলসজ্জার খাটে ফুলকপি থাকে? থাকে না। অথচ বিয়ের দুদিন পর থেকেই, ওগো বাজার থেকে ফুলকপি এনো গো। ক্যান প্রপোজে আমাকে তো ডাকিস নি! এইবার আমার দরকার! নিজের জীবন ভাজাভাজা করার সময় এদের আমাকে ভাজা দরকার। সব্জিমহলের গুনগুন, ফিসফাস— "হ্যাঁ ঠিকই তো... সত্যিই তো..." ফুলকপি বললো, তাহলেই বোঝো... সকলে বলে উঠলো, সত্যিই ভাই। আমাদের বুঝতে ভুল হয়েছে। তুমি থাকো, থাকো। ফুলকপি ফিক করে মুচকি হেসে ফিসফিসিয়ে বললো, গাধা।
Like
Yay
14
0 Commentarii 0 Distribuiri 536 Views 0 previzualizare