ফ্রেশ পাসপোর্টে মাত্র (৮৪৩০০) টাকা দিয়ে দুবাই ভ্রমন ও সাথে পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু ভবন বুর্জ খলিফায় উঠা।
 
প্রথমে আসি ভিসা কীভাবে করলাম:
বাংলাদেশের অনেক এজেন্সি দুবাইয়ের ভিসা করে থাকে। আমি আমার ভিসা একটি এজেন্সি থেকে করিয়েছিলাম আমার থেকে ১৬ হাজার টাকা লাগছে। এটা এজেন্সি ভেদে (১৬ হাজার থেকে ১৮) হাজার হয়ে থাকে।
ভিসা হয়ে যাওয়ার পর আমাদের এয়ার টিকিট কাটতে হবে। সেপ্টেম্বর থেকে ফ্রেব্রুয়ারি মাসে প্লেন ভাড়া (air fare) তুলনামূলক বেশি থাকে। যারা বাজেট ট্রাভেলার আছেন তারা ইউএস বাংলার টিকিট কাটতে পারেন কারন দুবাইয়ের রুটে সব এয়ারলাইন্সের তুলনায় প্রাইস কম থাকে। দেশীয় কয়েকটি সাইট আছে যেমন ( flight expert, share trip, go zayan) এইগুলা তে ফেয়ার কম্পেয়ার করতে পারবেন। যেই সাইটে সব থেকে কমে পাবেন এটা নোটডাউন করে রাখবেন। তারপর আপনি কয়েকটি এজন্সি থেকে রেট জানবেন তারা কত চায়।আমি আমার টিকিট করেছিলাম #flyhub থেকে তখন আমার টিকিট পড়েছিল ৫৭ হাজার টাকা। টিকিট করার সময় ওয়ান ওয়ে করে কাটবেন তাহলে ১৫শ থেকে ২ হাজার টাকার মত কম পরবেন।
 
তারপর হচ্ছে ইমিগ্রেশন প্রস্তুতি নেয়া:
সবচেয়ে কঠিন বিষয় হচ্ছে ফ্লাইটের দিন ইমিগ্রেশন পার করা। ফ্লাইটের মিনিমাম ৩ ঘন্টা আগে এসে বোর্ডিং পাস নিতে হবে। কারন ইমিগ্রেশন করতে অনেক টাইম লাগবে। ফ্লইটের আগের দিন আমরা আমাদের সব কিছু গুছিয়ে রাখব। ইমিগ্রেশন পার করার জন্য আমাদের কিছু ডকুমেন্টস রেডি করে রাখা লাগবে।
১)পাসপোর্টর ফটোকপি।
২)ভিসা কপি।
৩) এনআইডি।
৪)ট্রাভেল ইন্সুইরেন্স।
৫) হোটেল বুকিং।
৬) সাথে ক্যাশ ডলার।(এন্ডোর্সমেন্ট সহ)
৭) কিছু ট্যুরিস্ট প্লেসের টিকিট।
যেমন: (বুর্জ খলিফা, ফিউচার মিউজিয়াম, গ্লোবাল ভিলেজ ইত্যাদি) কয়েকটির কম দামে টিকিট বুক করে ফটোকপি নিয়ে আসবেন। (আমি যাওয়ার আগে বুর্জখলিফার কনফার্ম টিকিট
করে গিয়েছিলাম ১৫০ দিরহাম দিয়ে)
 
আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে পেশাগত প্রমান পত্র। আপনি যদি জব করে থাকেন তাহলে জব আইডি সাথে এনওসি নিয়ে আসবেন। যারা বিজনেস করেন তারা তাদের ট্রেড লাইসেন্সর ফটোকপি ভিজিটিং কার্ড নিয়ে আসবেন। আর আমার মত যারা আছেন তারা স্টুডেন্ট আইডি কার্ড সাথে করে মাস্ট নিয়ে আসবেন।
ফ্রেশ পাসপোর্ট হলে আপনাকে প্রথমে ইমিগ্রশনের সামনে একটা ডেস্ক আছে ঐখানে পাঠাবে। ঐখানে বেসিক কিছু প্রশ্ন করবে।
আপনি কী করেন? কোথায় থাকেন? কার কাছে যাবেন? (যদি পরিচিত কেউ থাকে তাহলে ভুলেও বলবেন না) কত দিন থাকবেন? কোথায় ঘুরবেন?
তারপর আপনাকে ঐ অফিসার পুলিশ বক্সে পাঠাবে ঐখানে তাদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা থাকেন। ঐখানেও আপনাকে সেম প্রশ্ন গুলো করবে। নিজেকে স্বাভাবিক রেখে এন্সার দিবেন। তারপর ঐ অফিসার আপনাকে যাওয়ার অনুমতি দিবে। মানে পাসপোর্টে সিল!!
এখানে বিরক্ত হওয়ার কোন কারন নেই। কারন ইমিগ্রেশন পুলিশের কাজই হচ্ছে এইসব বিষয়গুলো দেখা।সব কিছু শেষ করে বিমানে গিয়ে উঠবেন।
দুবাই ইমিগ্রেশন আপনার কাছে কিছুই দেখতে চাইবে না। জাস্ট পাসপোর্ট নিবে আর সিল দিয়ে দিবে! ( সাথে একটি সিম ফ্রি)
 
ইমিগ্রেশন শেষ করার পর হেটেলে পৌছাতে হবে 
দুবাইতে ট্যাক্সি ভাড়া অনেক বেশি, তবে সেই তুলনায় মেট্রো ভাড়া অনেক কম (৩-৫) দিরহামের মধ্যে, আর যেটা ট্যাক্সিতে মিনিমাম (২৫-৩০) দিরহাম হয়ে থাকে। এয়ারপোর্টের মধ্যে মেট্রো স্টেশন থেকে একটি মেট্রো কার্ড করে নিবেন খরচ হবে ২০ দিরহাম। আপনি কার্ডের ৫ দিরহাম ছাড়া বাকি টাকা ইউজ করতে পারবেন। এই একটি কার্ড দিয়ে বাসেও চড়তে পারবেন এমনকি এটা দিয়ে গ্রোসারি থেকে শপিং করে পেমেন্ট ও করতে পারবেন ।
আমার অভারঅল দুবাই ট্যুরে ট্রান্সপোর্টেশন কস্ট হচ্ছে ৭০ দিরহামের মত।
তবে, আমি হোটেলে না উঠে হোস্টেলের মধ্যে উঠি আমার প্রতি রাতের জন্য ২৫ দিরহাম পে করা লাগে।
৬ রাতে ১৫০ দিরহাম।
 
আর ট্যুারের মেইন বিষয় হচ্ছে খাওয়া দাওয়া
ভাই, বিশ্বাস করেন দুবাইতে খাবার খরচ বাংলাদেশের থেকেও কম। ১০ দিরহামের বিরিয়ানি নিলে একজনের পক্ষে খাওয়া অসম্ভব।
সকাল, দুপুর এবং রাতের খাবার মিলিয়ে প্রতি দিন ২০ দিরহাম এর মত খরচে হয়েছে।
৬ দিনে আমার খাবার খরচ হইছে প্রায় ১২০ দিরহাম।
 
টোটালি ট্যুরের খরচ হইছে:-
ভিসা = ১৬০০০ |=
এয়ারটিকেট= ৫৭০০০ |=
ট্রান্সপোর্টেশন= ২৩০০ |=
ফুড = ৪০০০ |=
বুর্জখলিফার টিকেট= ৫০০০ |=
সর্বমোট খরচ = (১৬০০০+৫৭০০০+২৩০০+৪০০০+৫০০০) |=
=৮৪৩০০ টাকা।
 
(বাজেট ট্রাভেলার হিসেবে অলওয়েজ চেষ্টা করি সবচেয়ে কম খরচে ট্রাভেল করার)